-->
শিরোনাম

গাইবান্ধায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান;নিহত দুইজনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযান;নিহত দুইজনসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

গাইবান্ধায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তুলে নেওয়ার পরদিন নিহত দুই ব্যক্তিসহ মোট পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন গাইবান্ধার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ইবনে মিজান।

তিনি বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইটের বাড়িতে অস্ত্র আছে, এমন গোপন সংবাদের ভিত্তিত্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযান চালায়। এসময় মোশারফ হোসেনসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। মোশারফের বাড়ি থেকে দেশীয় অস্ত্র ও ককটেল সাদৃশ্য বস্তু উদ্ধার করা হয়েছে।

এরআগে গত মঙ্গলবার সাঘাটা থানার উপপরিদর্শক দীপক কুমার রায় বাদী হয়ে অস্ত্র ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়। মৃত ব্যক্তিকে আসামি করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরবর্তীতে মৃত ওই ব্যক্তির নাম আসামি থেকে বাদ যাবে।

মামলায় আসামিরা হলেন মৃত সোহরাব হোসেন ও শফিকুল ইসলাম, অপর তিনজন আসামি হচ্ছেন, চিকিৎসাধীন ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন, শাহাদত হোসেন ও রিয়াজুল ইসলাম। তবে মৃত ব্যক্তিকে আসামি করা প্রসঙ্গে মামলার বাদী দীপক কুমার রায় দাবি করেন, ওই দুই ব্যক্তি মারা যাওয়ার আগেই মঙ্গলবার সকালে আটককৃত পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাহাদত হোসেনকে (৪৫) রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপর আহত দুইজনের মধ্যে ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাহারায় গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।আরেকজন রিয়াজুল ইসলাম (২৮) বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ আসিফ বলেন, ‘শাহাদত হোসেন আহত অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে এখানে ভর্তি হন। তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল ছিল। তাই উন্নত চিকিৎসার জন্য ওইদিন রাতেই তাকে রংপুরে পাঠানো হয়।

অপরদিকে নিহত দুই ব্যক্তির সোহরাব হোসেনের লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে মরদেহ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে সোহরাবের দাফন সম্পন্ন হয়। এ ছাড়া বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শফিকুল ইসলামের লাশের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা যায়। আজ বৃহস্পতিবার তাঁর জানাজা শেষে গোবিন্দী গ্রামে দাফন হওয়ার কথা রয়েছে।

সোমবার দিবাগত রাতে সাঘাটায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের সময় নির্যাতনে আটক দুজন মারা যান বলে অভিযোগ করেন স্বজনেরা। তবে অভিযানের সময় অসুস্থতাজনিত কারণে দুজনের মৃত্যু হয় বলে পুলিশ দাবি করেন। গত সোমবার গভীর রাতে তুলে নেওয়ার পর গত মঙ্গলবার দুপুরে পৃথক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ওই দুইজন মারা যান। এ ঘটনায় এখনো তিনজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। মারা যাওয়া ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়নের গোবিন্দী গ্রামের সোহরাব হোসেন (৩৫) ও একই গ্রামের শফিকুল ইসলাম (৪৫)। এরমধ্যে সোহরাব মঙ্গলবার দুপুরে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে এবং শফিকুল ইসলাম একইদিন সকালে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। আহত হন তিনজন। তারা হচ্ছেন সাঘাটা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন (৫৫) ও একই ইউনিয়নের বাশহাটা গ্রামের শাহাদত হোসেন এবং মোশাররফের গাড়িচালক উত্তর সাতালিয়া গ্রামের রিয়াজুল ইসলাম(২৮)

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version