-->
জুলাই-আগস্ট গণ অভ্যূত্থান

আহতদের চিকিৎসায় এক হাজার কোটি টাকা বাজেট চায় সার্বভৌমত্ব আন্দোলন

ঢাবি প্রতিবেদক
আহতদের চিকিৎসায় এক হাজার কোটি টাকা বাজেট চায় সার্বভৌমত্ব আন্দোলন

জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র জনতার গণ অভ্যূত্থানের দেড় মাস পরেও আহতদের মৃত্যুর কারন অনুসন্ধান ও চিকিৎসায় গাফিলতির তদন্তসহ গুরুতর আহতদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ১ হাজার কোটি টাকা বাজেটের দাবি জানিয়েছে সার্বভৌমত্ব আন্দোলন নামক একটি সংগঠন।

বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির সংগঠক ও নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের মুখপাত্র এমদাদ বাবু। তিনি বলেন, ছাত্র জনতা তাদের রক্তের বিনিময়ে ২০২৪ সালে নতুন এক বাংলাদেশ এনে দিয়েছে অথচ তারাই আজ যন্ত্রণায় হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছেন, তাদের ভাগ্যে অবহেলা ছাড়া আর কিছুই জুটছে না।

তিনি বলেন, বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরলে দেখা যায় আহতরা কোনরকম উন্নত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না। তাদের সুচিকিৎসার জন্য কোন রকম উপযুক্ত সরকারি বরাদ্দ আমরা দেখতে পাইনি। এমনকি যেসকল হাসপাতালে আহতরা চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে, সেখানেও যথেষ্ট অবহেলা করা হচ্ছে বিধায় এখন অবধি লাশের মিছিল থামছে না।

আন্দোলনের মাত্র দুই মাস অতিবাহিত হতে না হতেই আহতদেরকে নিজেদের বোঝা মনে করে জোরপূর্বক হাসপাতাল ত্যাগের তাড়া দেয়া হচ্ছে অথবা অন্য বেসরকারি হাসপাতালে শিফট হবার তাগাদা দেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।

লিখিত বক্তব্যে স্বাস্থ্য সচিবকে অনভিজ্ঞ ও ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট আখ্যায়িত করে বলা হয়, উনি উনার দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন এবং অনতিবিলম্বে উনার পদত্যাগ করা উচিৎ। তাঁর স্থলে একজন সম্মানিত অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সৎ, দেশপ্রেমিক ও সেবামুখী মানুষকে দায়িত্ব দেয়া উচিৎ। অতি দ্রুত নিটোর সেই দোষী পরিচালকে অপসারণ এখন সময়ের দাবী।

আহতদের চিকিৎসা সমস্যা সমাধানের ৩ টি উপায়ও বলে দেন সংগঠনটির সংগঠকরা। সমস্যার সমাধানে তিনটি পদক্ষেপগুলো হলো- ১) রাষ্ট্রিয় বাজেট বা কোষাগার হতে অসুস্থ ছাত্র-জনতার সুচিকিৎসার জন্য প্রথম মাসে ১০০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ দান, ২) অর্থোপেডিক্স, সার্জারী, চক্ষু, মেডিসিন, নিউরো, কিডনির বিশেষজ্ঞ সিনিয়র চিকিৎসকদের সমন্বয়ে ২০ সদস্যের একটি এডভাইজারি চিকিৎসক দল গঠন এবং ৩) অনতিবিলম্বে সাময়িক সময়ের জন্য এই আহত ছাত্রজনতাকে সেবা প্রদানের জন্য স্বাস্থ্য, স্বরাষ্ট্র, পররাষ্ট্র, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে একটি সরকারি কোর্ডিনেশন দপ্তর খোলা। যেখান থেকে তাদের জন্য বিদেশে সুচিকিৎসার জন্য প্রেরণার্থে পাসপোর্ট, এন আই ডি, জন্মনিবন্ধন, বিভিন্ন ডকুমেন্টারি ও ফিন্যান্সিয়াল সাপোর্ট সহ অন্যান্য বিষয়ে সহায়তা প্রদান করা হবে৷

সংবাদ সম্মেলন শেষে সার্বভৌমত্ব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সংগঠক শামীম রেজা বলেন, রাষ্ট্রের প্রধান এবং প্রথম কাজ ছিলো আহতদের যথাযথ উন্নত চিকিৎসা এবং নিহতদের সর্বোচ্চ সহায়তা৷ আজও প্রতিদিন আহতরা মারা যাচ্ছে চিকিৎসার অভাবে৷ এখানে ইউনুস সরকার জনতার সরকার, সেখানে সমন্বয়হীনতার কারণে এমন হচ্ছে৷ ফ্যাসিস্টের কাঠামো এখন শক্তিশালী ভাবে বসে আছে৷ যারা ঠিকমতো কাজ করছে না। আমরা সেই অথর্ব ফ্যাসিস্টের দোসরদের অপসরণ চাই৷ রেল মন্ত্রণালয় থাকা একজন সচিব কিভাবে কোন যোগ্যতায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পায় এটাই বিস্ময়। সঠিক লোক সঠিক জায়গায় দিতে হবে৷ সিস্টেমকে সুন্দর ভাবে জনগনের সুবিধামতো সাজাতে হবে৷ আর যদি তা না হয়, তবে এই ষড়যন্ত্র, ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে আবারো রাস্তায় নামবে জনসাধারণ।

কেন্দ্রীয় সংগঠক শ্মশান ঠাকুর বলেন, আহত নিহতদের আড়াল করা একটা ষড়যন্ত্র আর তাদের সঠিক চিকিৎসা না করা এই ষড়যন্ত্রের অংশ। ইউনূস সরকারের প্রতি অনুরোধ এই আহত এবং নিহতদের জন্য দ্রুত বরাদ্দ আর বাস্তবায়ন করার।

এছাড়াও সংগঠনটির পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, সার্বভৌমত্ব আন্দোলনের সংগঠক আব্দুল্লাহ হোসাইন, সহ সংগঠক ধ্রুপদী শান্তনু, আকাইদ রনি সহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version