-->
শিরোনাম

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫, এক সপ্তাহের মধ্যে প্রজ্ঞাপনের দাবি

ঢাবি প্রতিবেদক
চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫, এক সপ্তাহের মধ্যে প্রজ্ঞাপনের দাবি

চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ বছর, বিনামূল্যে আবেদনের সুযোগ, দ্রুত সময়ে নিয়োগ পরীক্ষা সম্পন্নসহ ঘুষ ও দূর্নীতি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রকল্যাণ পরিষদ।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এসময় তারা চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করতে ১ সপ্তাহের মধ্যে প্রজ্ঞাপনের দাবি জানান।

বাংলাদেশ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের মুখপাত্র মুজাম্মেল মিয়াজী বলেন, দীর্ঘ ১২ বছর যাবৎ থেকে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ নিয়ে আন্দোলন চলছে। কথা দিয়েও যৌক্তিক এই আন্দোলন মেনে না নিয়ে বিগত স্বৈরাচার সরকার প্রায় ৩০ লক্ষ ছাত্র যুব সমাজের সাথে প্রতারণা করেছে । অবশেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। বর্তমান সরকার বিপ্লবী সরকার (অন্তর্বর্তীকালীন) সরকার। একটি গণ অভ্যূত্থানের মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। তার মানে এই সরকার জনগণের সরকার। তাই এই সরকার থেকে আমরা দীর্ঘ দিন ঝুলিয়ে থাকা ৩৫ আন্দোলনের সফলতা কামনা করে দ্রুতই প্রজ্ঞাপন চাচ্ছি। যা এক সপ্তাহের মধ্যেই সম্ভব বলে আমরা মনে করি।

আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধির যোক্তিকতা নিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নয়নশীল এবং উন্নত ১৬২ টি দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে এবং অনেকে দেশে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা-ই নেই। তাই আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি করা অবশ্যক। বাংলাদেশের গড় আয়ু বৃদ্ধির সাথে সাথে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন যখন গড় আয়ু ছিল ৫৭ তখন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ছিল ২৭। যখন গড় আয়ু ছিল ৬০ তখন চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা হয়েছে ৩০। বর্তমান গড় আয়ু ৭২+ সেই হিসাবে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা হওয়া দরকার ৪০ কিন্তু আমরা ন্যূনতম ৩৫ চেয়েছি।

বাংলাদেশ ছাত্রকল্যাণ পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক সুরাইয়া ইয়াসমিন বলেন,বর্তমানে সেশনজট সামান্য কমলেও বিগত দিনে এর পরিমান ছিল ভয়াবহ। সেশনজটের কারনে যাদের জীবন থেকে ৬-৭ বছর হারিয়ে গেছে তাঁদের ক্ষতিপূরণ কি হবে? তাই চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা কমপক্ষে ৫ বছর বাড়ানো জরুরী। পিএইচডি করতে গিয়ে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী দেশে ফিরে আসেন কারন তখন তাঁর আবেদনের বয়সসীমা অলরেডি পার হয়ে গিয়েছি। এতে করে দেশে হাজার মেধার পাচার হয়ে যাচ্ছে। তাই দেশের মেধাবীদের দেশে রাখতে হলে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা কমপক্ষে ৫-১০ বৃদ্ধি করা জরুরী।

তিনি বলেন, সরকার উদ্যোক্তা হওয়ার কথা বলছে। একটি ছেলে যখন অনার্স পাশ করার পর তাঁর বয়স দাঁড়ায় ২৬-২৭ বছর তখন সে চাকরির জন্য পড়ার টেবিলে বসে পড়ে কারন তার কাছে আছে মাত্র ২-৩ বছর। এরপর রাষ্ট্র তাঁকে মেয়াদহীন ঘোষণা করে দিবে। তাঁর সার্টিফিকেটের কোন দামই থাকবেনা।মেয়েদের ক্ষেত্রে তো আরো বড় সমস্যা। একটি মেয়ে অনার্স পাশ করার পর বিয়ে হয়ে যায়। তখন তাঁর সংসার গুছাতে এবং সন্তান হলে শিশু সন্তানকে লালন পালন করতে ৭-৮ বছর শেষ হয়ে যায়। তাঁর তখন চাকরিতে আবেদনের মেয়াদ নেই। এইভাবে রাষ্ট্র অনেক মেধাবী বোনদের ডেট এক্সপেয়ার করে দিচ্ছে যাহা রাষ্ট্র ধ্বংসের শামিল।সকল যৌক্তিকতার সহিত এবং লক্ষ লক্ষ মেধা রক্ষার জন্য চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ন্যূনতম ৩৫ এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী শর্ত সাপেক্ষ্যে বৃদ্ধি করা সময়ের দাবি।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version