-->

নির্বাচন করবেন না আর

চট্টগ্রাম ব্যুরো
নির্বাচন করবেন না আর
ড. কর্নেল (অব.) অলি

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আর অংশ না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম। গত শনিবার মধ্যরাতে চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ-সাতকানিয়া আংশিক) নির্বাচনি এলাকার সাতকানিয়া আংশিক ধর্মপুর ইউনিয়নে বণিকপাড়া দুর্গামণ্ডপে সনাতনী সম্প্রদায়ের সঙ্গে শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময়ের বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন। তবে জানা গেছে, শুধু ধর্মপুর ইউনিয়ন নয়, সাতকানিয়ার আংশিকের অন্যান্য পূজামণ্ডপেও শুভেচ্ছা বক্তব্য দানকালে কর্নেল অলি এমন ইঙ্গিত দেন।

কর্নেল অলি আহমদ বলেন, ‘আমি আর নির্বাচন করব না। সেটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। আজ আমি আপনাদের সম্মুখে আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছি। সে আমেরিকা-লন্ডনে লেখাপড়া করেছে। তাকে আপনাদের জন্য তৈরি করেছি। সে ২০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছে। তার স্ত্রীও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। আপনাদের চিন্তা হচ্ছে আমার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন? আপনাদের কে ছায়া দেবে? ইনশাআল্লাহ সে আপনাদের খেদমত করবে। আর আমি যতদিন বেঁচে থাকব আমিও আগের মতো আপনাদের ছেড়ে যাব না।’

তিনি আরও বলেন, সঠিক সময়ে দায়িত্ব হস্তান্তর করা উত্তম। তখন স্থলাভিষিক্ত ভুল করলে শোধরানোর সুযোগ থাকে। আমি সেরকম চিন্তা করছি। সুখে-দুঃখে আপনাদের পাশে থাকার দায়িত্ব আমি আমার ছেলের ওপর অর্পণ করলাম। আপনারাও আমার ছেলের দায়িত্ব নিতে পারবেন কিনা প্রশ্ন রেখে উপস্থিত নেতাকর্মীদের হাত তুলে দেখাতে বলেন। এ সময় উপস্থিত দলীয় নেতাকর্মীরা হাত তুলে দায়িত্ব নেয়ার ওয়াদা করেন।

কর্নেল অলি বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর আমি এই এলাকায় আসিনি। আমি যদি আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসতাম তাহলে, আমার সাথে যেসব নেতাকর্মীরা আসতো তাদেরকে তৎকালীন স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠাতো। আমি আমার নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলতে চাইনি বলে আপনাদের মাঝে আসা থেকে বিরত থেকেছি।’

বিভিন্ন পূজামণ্ডপে বক্তব্যে শেখ হাসিনার পরিবারের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্ক নাই উল্লেখ করে ড. অলি আহমদ বলেন, ‘শেখ হাসিনা পরিবারের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের কোনো সম্পর্ক নাই। মুক্তিযুদ্ধের সময় শেখ মুজিব পাকিস্তানে ছিল। আর শেখ হাসিনা ও তার পরিবার ছিল তৎকালীন পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আশ্রয়ে। সেসময় যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি আমরা, আর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার গল্প শোনায় আওয়ামী লীগ। এগুলো কি মানা যায়?’

শেখ মুজিব স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি জানিয়ে এলডিপি সভাপতি বলেন, ‘সর্বপ্রথম স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য আমাকে বলা হয়েছিল। তখন মেজর জিয়াউর রহমান আমার সিনিয়র ছিলেন। তাই আমি তাকে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রটি পাঠ করার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তার প্রমাণ আমার কাছে এখনও আছে। আপনারা চাইলে সেটি দেখাতে পারব।’

তিনি বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার একটি কলঙ্কিত অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটেছে। এমতাবস্থায় কেউ যদি আপনাদের এখানে এসে সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করে তাহলে তাদের আটক করে আইনের হাতে তুলে দিবেন। যে কোনো প্রয়োজনে আমি, আমার ছেলে ও এলডিপির নেতাকর্মীরা আপনাদের পাশে থাকব।’

এ সময় উপস্থিত ছিলেন এলডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কর্নেল অলির ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক সানি, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা এলডিপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া শিমুল, সহ-সভাপতি এ জি এম শাহজাহান, সাতকানিয়া উপজেলা সাধারণ সম্পাদক মো.জসিম উদ্দিন, চন্দনাইশ পৌরসভার সভাপতি আইনুল কবির, উত্তর সাতকানিয়া সাংগঠনিক থানা সাধারণ সম্পাদক হোসাইন উদ্দিন ভুট্টো, এলডিপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে মো. নুরুন্নবী, আনিসুর রহমান সিকদার, দেলোয়ার হোসেন দেলু, জসিম উদ্দিন, আলী আকবর, মো. সেলিম উদ্দিন প্রমুখ।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version