নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় অবস্থিত অনেক দোকান থেকে দেশি বিদেশি নামি-দামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনী কিনে প্রতারণার শিকার হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা। বাজারে পাওয়া নামি-দামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের এসব নকল প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে ব্রণ, মেসতা, কালো দাগসহ নানাবিদ চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছে নারী ও শিশুরা। মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় অনেক দোকানে থরে থরে সাজানো রয়েছে দেশি বিদেশি নামি-দামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত অনেক পণ্যের প্যাকেটের গায়ে নেই আমদানিকারকের সিল। বিক্রেতারা নিজেদের ইচ্ছেমতো আমদানিকৃত অনেক পণ্যের প্যাকেটের গায়ে মোটা কালো কলমের দ্বারা শুধু কোড নম্বর লিখে রেখেছেন। এই কোড অনুযায়ী দোকানিরা ক্রেতাদের নয়ছয় বুঝিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো দাম নির্ধারণ করে প্রসাধনী বিক্রি করছেন। দোকানিরা নিশ্চিত ভাবে জানেন বিদেশ থেকে আমদানিকৃত যেকোনো পণ্য ক্রয়ের পূর্বে একজন ক্রেতার পক্ষে আসল নকল মান যাচাই করার সুযোগ নেই। যার ফলে সোনারগাঁয়ে মানহীন মেয়াদোৎতীর্ণ নকল প্রসাধনী ক্রয় করে এভাবেই প্রতিদিন ভোক্তারা প্রতারিত হচ্ছেন। দোকানিদের প্রতারণার বিষয়টি নিয়ে ক্রেতাদের মনে ক্ষোভ থাকলেও বিক্রেতারা এর দায় নিতে রাজি নন। দোকানিদের দাবি যারা নামি-দামি ব্র্যান্ডের নামে যেসব মানহীন নকল প্রসাধনী তৈরি ও বাজারজাত করার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে ধরে আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেয়া উচিত।
সরেজমিন উপজেলার কয়েকটি বিউটি পার্লারে গিয়ে দেখা যায়, দেশি বিদেশি নামি-দামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রসাধনী থরে থরে সাজানো রয়েছে। নকল এসব প্রসাধণী ব্যবহার করে বিউটি পার্লারে সাজানো হয় নববধূসহ বিয়ে বাড়িতে লগনে যাওয়া নারী ও শিশুদের। বিউটি পার্লারে নকল এসব প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে অনেকই বিভিন্ন চর্ম রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, সোনারগাঁয়ের বাজারে বিক্রি হওয়া নামি-দামি ব্র্যান্ডের অনেক পণ্য লাগেজে করে নিয়ে আসে। এরপর এগুলো দোকানে তুলে বিক্রি করা হয়। এছাড়া প্রচলিত বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোড়কে হুবহু নকল প্রসাধনী ভরে ডিলারের মাধ্যমে দোকানে দোকানে সরবরাহ করা হয়। সেগুলো আবার তুলনা মূলক কম দামে বিক্রি করা হয়। এসব পণ্য ব্যবহারে ক্রেতারা সাময়িক ভাবে কিছুটা উপকৃত হলেও পরে আবার সুদূর প্রসারী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হয়। অভিযোগ উঠেছে দেশের সীমান্ত এলাকা দিয়ে চোরাকারবারী চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন পণ্য নিয়ে আসে। এতে করে মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
সোনারগাঁ উপজেলা সদর হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাবরিনা হক জানান, দেশি-বিদেশি নামি-দামি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নকল প্রসাধনী ব্যবহারের কারনে নানাবিদ চর্ম রোগে আক্রান্ত হয়ে বাড়ছে রোগীর সংখ্যা। সোনারগাঁয়ে যেসব দোকানিরা নকল প্রসাধনী বিক্রি করে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য