সাভারের আশুলিয়ার বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক অবরোধ করে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন জেনারেশন নেক্সট নামে একটি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এতে নবীনগর-চন্দ্রা ও আব্দুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল ত্রি-মোড় এলাকায় অবস্থান নিয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। এর আগে, সোমবার সকাল ১০টা থেকে কারখানাটির শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। যা চলতে থাকে দিনভর। শ্রমিকদের অবরোধের মুখে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে সড়কটি। একই সাথে ওই এলাকা থেকে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কটিতেও যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে সড়কটির উভয় পাশের লেনে।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ গত তিন মাস যাবত শ্রমিকদের বেতন ও অন্যান্য ভাতা পরিশোধ করছে না। বেতন না দিয়েই কিছুদিন আগে কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। মালিকপক্ষ কয়েক দফায় শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলেও গত ৩ মাসে কোন বেতন ভাতা পাননি তারা। কারখানাটিতে স্টাফদেরও কয়েক মাসের বেতন ভাতা বকেয়া বলে জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
সাইফুল ইসলাম নামে কারখানাটির একজন শ্রমিক বলেন, গত তিন মাস ধরে পরিবার নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটাচ্ছি। বাসা ভাড়া ও দোকানে বাকি থাকায় অনেকটাই না খেয়ে দিন পার করছি। কোথাও চাকরিও পাচ্ছি না। এক মাসের বেতন-ভাতা বকেয়া রেখে গত দুই মাস আগে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ ঘোষণা করে। এখনও কারখানা বন্ধ রয়েছে। চলতি মাস পর্যন্ত আমাদের ৩ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। গত মাসে বিজিএমইএ এবং শ্রম মন্ত্রণালয় আমাদের আশ্বাস দিলেও এখনও বকেয়া বেতন ভাতা পাইনি। তাই বাধ্য হয়ে মহাসড়কে এসেছি। বেতন না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে বলেন এই শ্রমিক।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানা সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, কারখানার চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম পলাতক রয়েছে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাজীব শেট্টি ভারতীয় নাগরিক। তিনি দেশে ফিরে গেছেন। ফলে বিষয়টি এখনও সমাধান হয়নি। কারখানাটির প্রায় ৪ হাজার শ্রমিক রয়েছে। এটিতে প্রায় ১৩-১৪ কোটি টাকার বকেয়া রয়েছে।
কারখানার কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট একজন বলেন, সরকার বা ব্যাংক ঋণে টাকা দিলে কারখানা পুনরায় চালু করা যাবে।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সকাল থেকে আবারও মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেছে শ্রমিকরা। আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছি।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম বলেন, জেনারেশন নেক্সট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকের বিষয়ে আলোচনা চলছে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য