জুলাই বিপ্লব চলাকালীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল এবং আশে পাশের আন্দোলনকারীদের সকল ফুটেজ সংগ্রহ করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ৪ টি নতুন হার্ডডিস্ক কিনে ফুটেজ সংগ্রহ, আইসিটি সেলের এক কর্মচারীকে দীর্ঘদিন যাবৎ নিজ বাসায় কাজ করানোসহ নানা অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলের অনারারি পরিচালক অধ্যাপক আসিফ হোসাইন খানের বিরুদ্ধে।
অধ্যাপক আসিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক। তিনি ২০১৭ সালে আইসিটি সেলের অনারারি পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পান। অভিযোগ রয়েছে তার নিয়োগের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি স্বপদে বহাল রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আসিফ হোসাইন আওয়ামী সমর্থক শিক্ষক এবং জুলাই গণ অভ্যূত্থানে প্রত্যক্ষ ভাবে শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান করে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে সেগুলো ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন জায়গা ছড়িয়ে দিতেন। পাশাপাশি ছাত্রলীগের অপকর্মের সিসিটিভি ফুটেজ মুছে দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
আইসিটি সেল থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২৫ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক সকল কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও ঐ সময় তিনি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের জন্য ৪ টি হার্ডডিস্ক ক্রয়ের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দুই কিস্তিতে ৪০ হাজার টাকা তুলেছেন। তার একটি কপি ভোরের আকাশের হাতে এসেছে।
এছাড়াও বিপ্লব পরবর্তী সময়ে নানান অভিযোগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পড়ে কিছুদিন অফিস এবং শ্রেণি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকেন অধ্যাপক আসিফ। এক শিক্ষার্থী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সংসদ নামক একটি ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ তুলে লিখেছেন, ❝ঢাবিতে সন্ত্রাসী হামলায় অধ্যাপক আসিফ প্রত্যক্ষ ভাবে সন্ত্রাসীদের সাহায্য করেছেন। সিসিটিভির ফুটেজ দেখে লীগের কাছে ছাত্রদের ইনফো পাঠাতেন। গ্রেফতারের জন্য পুলিশকে সহায়তা করতেন এবং ছাত্রদের কার্যক্রম মনিটরিং করে তাদেরকে ধরিয়ে দিতেন।❞
আইসিটি সেল থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, ৫ আগস্টের পর থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পড়ে প্রায় ২৫ দিন তিনি শ্রেণি কার্যক্রম ও অফিসে আসেননি। আইসিটি সেলের কর্মচারী সুজনকেও তিনি তার সঙ্গে রেখেছিলেন। তার মোবাইলও ঐ সময় বন্ধ ছিলো। পরিস্থিতি শান্ত হলে তিনি ফিরে আসেন। অভিযোগ রয়েছে আইসিটি সেলের সব জায়গায় তিনি তার নিজস্ব লোকবল সেট করে রাখায় কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বলতেও ভয় পায়।
এছাড়াও অফিস কর্মচারী সুজনকে ব্যক্তিগত কাজে মাসের পর মাস সাভারের নিজ বাড়িতে কাজ করানোর অভিযোগও উঠেছে অধ্যাপক আসিফের বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আইসিটি সেলের এক কর্মচারী বলেন, সুজন ৫ থেকে ৭ মাস মত অফিসে আসেননি। তিনি পরিচালকের ব্যক্তিগত কাজ করেছেন।
জানতে চাইলে সকল অভিযোগ অস্বীকার করেন অধ্যাপক আসিফ ও সুজন। অধ্যাপক আসিফ বলেন, সিসিটিভি ফুটেজের জন্য হার্ডডিস্ক কেনা হয়েছে সত্যি কিন্তু এটা প্রক্টরের নির্দেশনায় করা হয়েছিলো। কারও ছবি বা ফুটেজ সংগ্রহের জন্য নয়।
২৫ দিন অফিস না করার কথা অস্বীকার করে তিনি বলেন, আমার সব জায়গা স্বাক্ষর রয়েছে। আমি অফিসে ছিলাম। অথচ একাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী বলছেন তিনি পরে এসে স্বাক্ষর করেছেন।
সুজনের বিষয়ও তিনি এবং সুজন দুজনই অস্বীকার করেন। ফোন কল করলে সুজন প্রতিবেদকের কল রেকর্ড শুরু করেন এবং অভিযোগ অস্বীকার করেন। অথচ রিপোর্টিং তার নাম ছিলো না বলে আইসিটি সেল থেকে জানা যায়।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য