গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন ও বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন দুটি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর থেকে স্টেশন দুটির কার্যক্রম এবং সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটির চলাচল তিন মাস বন্ধ থাকার পর আগামীকাল (১৫ নভেম্বর) থেকে পুনরায় চালু হচ্ছে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন। টিকিট মিলবে অনলাইনে। ইতিমধ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রেল বিভাগ।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশি) সহকারী বানিজ্যিক কর্মকর্তা এ.কে এম নুরুল আলম এ তথ্য নিশ্চিত করছেন।
এর আগে গত ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (পশ্চিম) এর পক্ষে ডেপুটি চীফ অপারেটিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট (পশ্চিম) মোসা. হাসিনা খাতুন স্বাক্ষরিত এক পত্রে ট্রেন পুনরায় চালুকরণের এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
বাংলাদেশ রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশি) সহকারী বানিজ্যিক কর্মকর্তা এ.কে এম নুরুল আলম ভোরের আকাশকে বলেন, তিন মাস আগে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ১৫ নভেম্বর থেকে আগের নিয়মেই সিরাজগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচল করবে। আগে সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন থেকে টিকিট অনলাইন ছিলনা। তাই এখন থেকে ট্রেনের টিকিট অনলাইনে পাওয়া যাবে। যাত্রীরা ঘরে বসে ট্রেনের টিকিট কাটতে পারবে।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ ঘোষনা করা হয়। আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় টিকিট কাউন্টার।
সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালুর দাবীতে জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চুর নেতৃত্বে আন্দোলনে নামে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। নিয়ে স্বারকলিপি প্রদান, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এই আন্দোলনের প্রেরিক্ষেতে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর উদ্যেগ নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু ভোরের আকাশকে বলেন, আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই রেলওয়ের সচিব, জেলা বিএনপির সভাপতি রুমানা মাহমুদ সহ সিরাজগঞ্জের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষসহ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের। আমি সর্বোচ্চ কৃতজ্ঞতা জানাই সিরাজগঞ্জে কর্মরত সকল গণমাধ্যমকর্মীদের। তাদের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতোনা।
তিনি আরও বলেন, আমি ট্রেন চালুর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছি, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষদের নিয়ে মানববন্ধন করেছি, স্মারকলিপি দিয়েছি। সচিবের সঙ্গে দেখা করে অনুরোধ করেছি। অবশেষে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু হতে যাচ্ছে, এই অর্জন সিরাজগঞ্জবাসীর।আমার আরও দাবি থাকবে, যমুনা নদীর উপর নির্মানাধীন রেলসেতু চালু হবার পরে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলো যেন সিরাজগঞ্জ শহর হয়ে চলাচল করে। এতে শিল্পাঞ্চলে পরিনত হতে যাওয়া সিরাজগঞ্জের মানুষ অনেক উপকৃত হবে।
উল্লেখ্য: গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন ও বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত শহীদ এম মনসুর আলী স্টেশন দুটি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর থেকে স্টেশন দুটির কার্যক্রম এবং সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটির চলাচল বন্ধ করে দেয় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য