ভোলার চরফ্যাশনে ধান সিদ্ধ করার বয়লার বিস্ফোরণে একজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও দুজন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। শুক্রবার ভোর ৫টায় উপজেলার চর মাদ্রাজ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের চর আফজাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শ্রমিকের নাম মো. আল-আমিন (৩০)। আহত দুজন হলেন নিহতের সহোদর ভাই ফিরোজ (২৭) ও ব্রয়লারের মিল মালিক মনির। নিহত আল-আমিন চর আফজাল গ্রামের মৃত জলিল মাঝির ছেলে। তার দুই মেয়ে ও স্ত্রী রয়েছে।
সরেজমিন জানা যায়, গত তিন দিন আগে চুল্লিটি তৈরি করা হয়েছে। ধান সেদ্ধ করতে প্রতিদিন ভোর পাঁচটার দিকে আগুন দেয়া হয় চুল্লিতে। মিল মালিক আহত মনিরের স্ত্রী ও স্থানীয়রা জানান ভোর পাঁচটার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায় এলাকাবাসীর। দৌড়ে এসে ঘটনাস্থলে দেখতে পান নিহত ও আহতরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।
স্থানীয়রা আহত ব্যক্তিদের চরফ্যাশন সদর হাসপাতালে নিলে তিনজনের মধ্যে আল-আমিনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। নিহতের ভাই ফিরোজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালে রেফার করা হয়, মিলমালিক মনির চরফ্যাশন সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সরেজমিন দেখা যায়, ব্রয়লারের ছিটকে পড়া চুল্লি ও ইটের টুকরো দেখে। বিস্ফোরণে ধান সিদ্ধ করার চুল্লির পাইপ দুর্ঘটনা স্থল থেকে অন্তত ৪-৫ গজ দূরে গিয়ে ছিটকে পড়ে, ছিন্নভিন্ন ইটের টুকরোগুলো পড়ে আছে পুরো মাঠজুড়ে। দুর্ঘটনায় স্বজন হারানোদের কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে পুরো গ্রাম। খবর শুনে এক নজর দেখতে হাজারো মানুষের ভিড় দেখা গেছে ঘটনা স্থলজুড়ে। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে পুলিশ, দেখা গেছে স্থানীয় গণ্যমান্যদেরও।
মাদ্রাজ ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপির নেতা জানান দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছেন, নিহত ও আহতদের পরিবারের সাথে কথা বলেছেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কাউকে দোষারোপ বা কোন দাবি না থাকায় পুলিশকে অনুরোধ করেছেন বিনা ময়নাতদন্তে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তরের জন্য।
এলাকাবাসী জানান, মিলমালিক মনির অন্য জায়গায় দেখে এসে নিজের তৈরি করেছেন ধান সেদ্ধ করার ব্রয়লারের চুল্লি। যেখানে ছিল না কোনো বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থা। যার কারণেই ঘটেছে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনা।
বিস্ফোরণের ঘটনায় চরফ্যাশন থানার অফিসার ইনচার্জ জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। নিহত বা আহত ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ হতে অভিযোগ করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য