-->

গাইবান্ধায় বরেন্দ্র এলাকায় চাষ হচ্ছে কাজু বাদাম

গাইবান্ধা প্রতিনিধি
গাইবান্ধায় বরেন্দ্র এলাকায় চাষ হচ্ছে কাজু বাদাম

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের বরেন্দ্র এলাকায় কাজু বাদাম চাষের উজ্জল সম্ভবনা রয়েছে। এ জেলার একমাত্র ভারীশিল্প রংপুর চিনি কলের অনুকূলে থাকা সাহেবগঞ্জ বানিজ্যি খামারে আখের পাশাপাশি কিছু স্থানে প্রায় ১৫শ একর জমিতে চাষের সম্ভবনা রয়েছে এই দামি কৃষিপন্য। তবে নানা প্রতিকুলতার মাঝেও এই খামারের ১০ একর জমিতে ৫০টি গাছে চাষ হচ্ছে কাজু বাদাম। তবে অবহেলায় আর অযত্নে নষ্ট হচ্ছে গাছের ফসল উৎপাদন ক্ষমতা এবং রক্ষণাবেক্ষন না থাকায় পরিপক্ক হওয়ায় আগেই গাছের কাজু বাদামগুলি চুরি হয়ে যাচ্ছে।

এ জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার ১৭ ইউনিয়নের মধ্যে সাপামারা, গুমানীগঞ্জ, কাটাবাড়ী, কামদিয়া, রাজাহার, শাখাহার ইউনিয়ন গুলো বরেন্দ্র এলাকায় অবস্থিত। যে কারণে এই মাটিতে কাজু বাদাম চাষের উজ্জল সম্ভবনা রয়েছে।

গাইবান্ধা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কাজু বাদাম সাধারণত বন্যা প্রবণ এলাকার বাইরে পাহাড়, টিলা ও উচু এলাকায় এই ফল চাষে ভাল ফলন পাওয়া যায়। বাজারে এই ফলের উচ্চ মূল্য থাকায় দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে রপ্তানি করেও লাভবান হওয়া সম্ভব। সাধারণত প্রতিবছর চৈত্র-বৈশাখ মাসে গাছে কাজু বাদামের ফুল ও ফল দেখা যায় আর পরিপক্ক হয় জৈষ্ঠ আষাঢ মাসে। ইতিমধ্যেই দেশে অনেক ফল উৎপন্ন হলেও গুনাগুন, চাষ উপযোগি জমি, গাছের পরিচর্যা এবং গাছ থেকে ফল আহরণ ও তা সংরক্ষণ সম্পর্কে ধারণা না থাকায় কাজু বাদাম চাষে তেমন কোন আগ্রহ নেই সাধারণ কৃষকদের মাঝে।

জানা যায়, ১৯৮৫ সালে সাপমারা ইউনিয়নের রংপুর চিনিকলের আওতায় সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামার খামারের কার্যালয়ের আবাসিক এলাকায় ভেরভেরা বিলের উপর প্রায় ১০ একর জায়গায় ৬০/৭০ টি কাজু বাদামের গাছ লাগানো হয়। পরিচর্যা না থাকায় বেশ কিছু গাছ মরে গেলেও বর্তমানে প্রায় ৫০ টি গাছ বেঁচে রয়েছে। যেগুলি থেকে প্রতিবছর নিয়মিত ফল ধরছে। কিন্তু, কর্তৃপক্ষের নজর না থাকায় বেশির ভাগ গাছের ফল নানা ভাবে নষ্ট হচ্ছে। আবার যাদের কাজু বাদামের ফল সম্পর্কে ধারণা রয়েছে তারাও বাধাহীন ভাবে বাগানের গাছ থেকে তুলে নিয়ে যায়।

এ বিষয়ে কথা হয় গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলমের সঙ্গে তিনি ভোরের আকাশের প্রতিবেদককে বলেন, কাজু বাদাম সাধারণত পাহাড়ি ও শুস্ক মাটি এলাকায় ভাল গাছ হয় এবং ফলন পাওয়া যায়। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বরেন্দ্র এলাকার পরিত্যাক্ত উচুঁস্থানে এই বাদামের বাগান গড়ে তোলা যেতে পারে। তবে কাজু বাদামে ফল আসতে প্রায় দশ বছর সময় লাগে। দীর্ঘ মেয়াদি হওয়ায় কাজু বাদাম চাষে অনেকেই আগ্রহ দেখায় না। তবে দীর্ঘ মেয়াদি হলেও এই গাছের ফাঁকে পরিত্যাক্ত স্থানে আদা হলুদ সহ ছায়া সহনশীল ফসলের চাষ করে কাজু বাদাম না হওয়া পর্যন্ত পুষিয়ে নেয়া যায়। কেউ যদি এই অর্থকারী ফল কাজু বাদাম চাষ করতে আগ্রহ প্রকাশ করে তা হলে কৃষি বিভাগ থেকে তাকে প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version