বিশ্বের একমাত্র উড়ন্ত চক্ষু হাসপাতালে ক্যাটারাক্ট, অকুলোপ্লাস্টিকস, সার্জিক্যাল রেটিনা, শিশু গ্লুকোমা এবং কর্নিয়ার মতো চক্ষু রোগের চিকিৎসা প্রশিক্ষণ নিচ্ছে অ্যানেস্থেশিওলজি, নার্সিং এবং বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কর্মরতরা। বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পার্কিং করে রাখা “অরবিস ফ্লাইং আই হসপিটাল” এ দেখা গেছে এমন চিত্র।
১৭ নভেম্বর থেকে এ প্রশিক্ষণ শুরু হয়ে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। বাংলাদেশের চক্ষু বিশেষজ্ঞদের জন্য আন্তর্জাতিক অলাভজনক অরবিস ইন্টারন্যাশনাল হসপিটালে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির ক্লিনিক্যাল স্টাফ ও স্বেচ্ছাসেবক বিশেষজ্ঞরা (ভলান্টিয়ার ফ্যাকাল্টি) সারা দেশ থেকে আসা চক্ষু বিশেষজ্ঞদের হাতে-কলমে সার্জারি ও রোগী সেবা প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। পাশাপাশি সিমুলেশন প্রশিক্ষণ ও চক্ষু কর্মশালার আয়োজনও করা হয়।
স্থানীয় চক্ষু সেবাদাতাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা এবং বাংলাদেশে চক্ষু স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটির ডিরেক্টর মরিস গ্যারি বলেন, চক্ষু চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ দিতে বাংলাদেশে ১১ তম বারের এসেছে “অরবিস ফ্লাইং আই হসপিটাল”। ৫ম বারের মত এসেছি চট্টগ্রামে। এবার ১৮০ জন অ্যানেস্থেশিওলজি, নার্সিং এবং বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে কর্মরতদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ৩৯ বছর ধরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করছে অরবিস। অরবিস শিশুদের চক্ষু চিকিৎসা, মাইক্রোসার্জারি, রেটিনা সার্জারি, কর্নিয়াল রোগ এবং আই ব্যাংকিং, প্রিম্যাচিউর শিশুদের রেটিনোপ্যাথি (আরওপি), এবং ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথির ওপর স্থানীয় চিকিৎসকদের দক্ষতা ও জ্ঞান উন্নত করতে সহায়তা করেছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে অরবিস ৭৮ লাখেরও বেশি চক্ষু পরীক্ষা করেছে, ৪৫ লাখেরও বেশি প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের জন্য চিকিৎসা ও অপটিক্যাল সেবা প্রদান করেছে, দুই লাখ ৫৮ হাজারেরও বেশি চক্ষু সার্জারিতে সহায়তা করেছে, এবং ৪০হাজারের বেশি মানুষকে চক্ষু চিকিৎসার ওপর প্রশিক্ষণ দিয়েছে।
জানা যায়, অরবিস ৪২টি ভিশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করেছে, যা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকাগুলোতে চক্ষু সেবা ছড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নারী-নেতৃত্বাধীন গ্রিন ভিশন সেন্টার যা নারীদের জন্য প্রচলিত বাধাগুলো দূর করে সেবার সুযোগ বৃদ্ধি করে। এছাড়াও, অরবিস ১৭টি সেকেন্ডারি হাসপাতাল, চারটি তৃতীয় পর্যায়ের (টার্শিয়ারি) হাসপাতাল, চারটি ট্রেনিং অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার এবং দু'টি ডিজিটাল প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা ও উন্নত করতে সহায়তা করেছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আমন্ত্রণে এবং অ্যালকন কেয়ারস, অ্যালকন ফাউন্ডেশন ও ফেডেক্স এর সহায়তায় অরবিস ফ্লাইং আই হসপিটাল চট্টগ্রামে দুই সপ্তাহব্যাপী চক্ষু প্রশিক্ষণ প্রকল্প শুরু করেছে। বাংলাদেশে ১৯৮৫ সালে প্রথমবার এবং সর্বশেষ ২০১৭ সালে এই প্রশিক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে অরবিস।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য