চট্টগ্রামের ফৌজদারহাট এলাকায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেস (বিআইটিআইডি) এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশে আমদানি করা মাছ ও পোলট্রি ফিডের কাঁচামালের গুদামের দুর্গন্ধে পরিবেশ দূষণ চরমে পৌঁছেছে। এতে হাসপাতালের রোগী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা অসহনীয় অবস্থায় পড়েছেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, "ইব্রাটাস ট্রেডিং কোম্পানি" নামের একটি প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে রূপালী গুদামে এসব পণ্য মজুত করে আসছে। এসব পণ্য থেকে সৃষ্ট দুর্গন্ধ পুরো এলাকার পরিবেশ ভারী করে তুলেছে। প্রতিদিন শ্রমিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক সমস্যার শিকার হচ্ছেন।
দূষণের মাত্রা ও প্রভাব: গুদামের পাশের একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মো. শহীদ বলেন, "দুর্গন্ধের কারণে আমাকে মাসে কয়েকবার হাসপাতালে যেতে হয়। মুখ বেঁধে কাজ করলেও সমস্যা এড়ানো যায় না।"
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা আবদুল করিম জানান, পোলট্রি ফিডের দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ বিষাক্ত হয়ে উঠেছে। আশপাশের সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং আবাসিক এলাকাগুলোতে জীবনযাত্রা প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠেছে।
অবস্থা সরেজমিনে: গুদামে গিয়ে দেখা গেছে, মাছ ও পোলট্রির কাঁচামালে ভর্তি হাজার হাজার বস্তা মজুত রয়েছে। গুদামে কর্মরত সম্রাট নামে একজন জানান, "আমদানিকৃত পণ্য এখান থেকে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সরবরাহ করা হয়।"
ব্যবসায়ী ও স্থানীয়দের উদ্বেগ: ব্যবসায়ী ইমাম হোসেন বলেন, "রূপালী গুদামের দুর্গন্ধে এলাকায় থাকা দায় হয়ে পড়েছে। এই গন্ধ সহ্য করা কঠিন, অথচ এটি মাছ ও মুরগির খাবার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এর মান নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে।"
গুদামের ব্যবস্থাপক মো. নাজিম উদ্দিন জানান, দুর্গন্ধ কমাতে দেয়ালে অ্যাডজাস্ট ফ্যান স্থাপন করা হয়েছে, যা কিছুটা সহনীয় অবস্থার সৃষ্টি করেছে বলে তিনি দাবি করেন।
সমাধানের দাবি: স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশাসনের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এ অঞ্চলের হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সাধারণ মানুষের জীবনমান আরো বিপর্যস্ত হবে।
স্বাস্থ্যসেবা এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংলগ্ন এলাকায় এ ধরনের গুদামের অস্তিত্ব শুধু পরিবেশ নয়, জনস্বাস্থ্যের জন্যও মারাত্মক হুমকি। স্থানীয় প্রশাসনের উচিত দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সমস্যার সমাধান করা। পরিবেশ বাঁচাতে এখনই উদ্যোগ প্রয়োজন।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য