শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে একটি কারাগারে পরিণত করেছিল

ডা: শফিকুর রহমান

বরিশাল ব্যুরো
শেখ হাসিনার সরকার বাংলাদেশকে একটি কারাগারে পরিণত করেছিল

শেখ হাসিনার সরকারের আমলে সারা বাংলাদেশকে একটি কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল। কথা বলার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আমীর ডা: শফিকুর রহমান। রবিবার সন্ধ্যায় আমীরে জামায়াতের বরিশাল সফর উপলক্ষে নগরীর নথুল্লাবাদ কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীরে জামায়াত আরও বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ আগস্ট থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বহু মানুষকে গুম ও খুন করা হয়েছে। বহু মানুষকে নির্মমভাবে অত্যাচার করা হয়েছিলো শুধু মাত্র সত্যের পক্ষে থাকার জন্য। প্রবীণ ও বিজ্ঞ আলেমদেরও তারা জেলে দিতে দ্বিধা বোধ করেনি। তাদের পায়েও ডান্ডা বেডি পরিয়েছে। কোমরে দড়ি পরিয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আল্লাহ আরশ কেঁপে উঠেছিল এই নির্দোষ আলেমদের জন্য। কুরআনের পাখি আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাইদিকে তারা তিলে তিলে খুন করেছে। আমাদের সিপাহী সালার বহু নেতাকে তিলে তিলে খুন করা হয়েছে।

অনেক সাংবাদিক আমাকে বলেন, আপনাদের কারা ২৪ এই আন্দোলনে শহীদ হয়েছে। আমি বলি, যারা শহীদ হয়েছে তারা কোনো দলের হতে পারে না, তারা সবাই আমাদের সম্পদ। তারা বুক চিতিয়ে রাস্তায় নেমে বলেছিল, "বুকের ভিতর অনেক ঝড়, বুক পেতে গুলি কর।" এই শহীদরা সবাই আমাদের সম্পদ। আবু সাইদ কি করেছিল? সে কি হাতে গুলি নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল? না, সে শুধু বলেছিল, "আমার অধিকার দেও।" কিন্তু এই জালিমরা ৩টি গুলি করে তাকে শহীদ করেছে।

আমরা এই সকল শহীদ পরিবারের কাছে ঋণী। আমরা প্রত্যেকটি পরিবারকে আশ্বস্ত করতে চাই, আমরা আপনাদের পাশে আছি। আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আপনাদের পাশে আছি। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে লড়াই করে তাদের অধিকার আদায় করবো।

একজন বিচারপতি কলার পাতায় শুয়ে দেশ ছাড়তে চায়, তার এই অবস্থা আমাকে লজ্জিত করে; তবে তারা বিচার ব্যবস্থা যেভাবে ধ্বংস করেছে, তা আমাকে আরো বেশি লজ্জিত করে।

তারা চেয়েছিলো, তারা ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে। এমন একটা ভাব, তারা দেশের মালিক আর আমরা সবাই ভাড়াটে। কিন্তু আমরা এমন একটা বাংলাদেশ চায়, যেখানে কোন গুম, খুন, ছিনতাই হবে না। সবাই সম্মানের সাথে নিজ মর্যাদা নিয়ে চলবে। আমরা এমন যুব সমাজ চায়, যেখানে মাদকের ছোয়া থাকবে না।

আমাদের ৩ জন শীর্ষ স্থানীয় নেতা একে একে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলো। আমরা গর্বের সাথে বলতে পারি, তাদের হাত ছিলো দুর্নীতিমুক্ত। সেই দলের মানুষগুলোই আজ জামায়াতে ইসলামী করেন।

আল্লাহ রাসূল বলেছেন, যে রাষ্ট্রে মুসলমান থাকবে সংখ্যাগরিষ্ঠ, সেখানে সংখ্যা লঘুদের কাছে আমানত। কেউ যদি এই আমানত রক্ষা না করে, তবে কিয়ামতের দিন তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবো।

মহানগর আমির অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবরের সভাপতিত্বে ও মহানগর সেক্রেটারি মাওলানা মতিউর রহমানের সঞ্চালনায় প্রোগ্রামে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য জনাব মোবারক হোসাইন। বরিশাল জেলা আমির অধ্যাপক আব্দুল জব্বার, ভোলা জেলা আমীর জাকির হোসাইন, পটুয়াখালী জেলা আমির অ্যাডভোকেট নামজুল আহসান, ঝালকাঠি জেলা আমির অ্যাডভোকেট হাফিজুর রহমান।

আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর নায়েব আমীর হোসাইন ইবনে আহমেদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মাস্টার মিজানুর রহমান, হাফেজ হাসান আতিক, তারিকুল ইসলাম, কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম খসরু, মাওলানা জয়নুল আবেদিন, মাওলানা শহিদুল ইসলাম, মাওলানা শফিউল্লাহ তালুকদার, অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান আমিন, মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, শামীম কবির, মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক আনোয়ার হোসাইন, অধ্যাপক সুলতানুল আরেফিন, মুজিবুর রহমান, মোয়াজ্জেম হোসেন হাওলাদার, অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের শহীদ প্রমুখ।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য