সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার বিচার দাবি নাগরিক কমিটির

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার বিচার দাবি নাগরিক কমিটির

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার মংলারগাঁও গ্রামে কোরআন অবমাননার অভিযোগে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় সরেজমিন পরিদর্শন করেছে জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিদল।

শনিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে প্রতিনিধি দল মংলারগাঁও গ্রাম পরিদর্শন করেন এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য আইনজীবী মানজুর আল মতিন, প্রীতম দাশ, তাজনুভা জাবিনসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইনজীবী মানজুর আল মতিন বলেন, "যাঁরা হিন্দু ভাইদের বাড়িঘরে হামলায় জড়িত, তাঁদের আইনের আওতায় এনে বিচার হওয়া দরকার। যারা হামলা করেছেন, তারা গোটা দেশের ঐক্য ও সম্প্রীতি রক্ষার যে চেষ্টা, সেটিকে বাধাগ্রস্ত করছেন। তাঁদের চিহ্নিত করতে হবে।"তিনি আরও বলেন, "যিনি কোরআন অবমাননা করেছেন, তাঁরও বিচার নিশ্চিত হওয়া জরুরি। না হলে এ ধরণের আবেগকে কেন্দ্র করে মানুষকে বিপথে নেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এটা কোনোভাবেই হতে দেওয়া যাবে না।"

মানজুর আল মতিন আরও বলেন, "স্থানীয় হিন্দু ভাইয়েরা আমাদের জানিয়েছেন, যখন ক্ষুব্ধ জনতা হামলা করতে আসে, তখন এলাকার ইমামসহ আরও লোকজন তাঁদের বাড়িঘর রক্ষায় এগিয়ে আসেন। এই উদাহরণগুলো সারা বাংলাদেশে সৃষ্টি করতে হবে। ভাই হয়ে ভাইয়ের পাশে সবসময় দাঁড়াতে হবে।"

তিনি আরও উল্লেখ করেন, "বাংলাদেশ এখন ঐক্যের বাংলাদেশ। হিন্দু-মুসলমানসহ সকল ধর্মের মানুষের বাংলাদেশ। এই গ্রামের ঘটনা নিয়ে ভারতীয় অনেক গণমাধ্যম মিথ্যা ও গুজব ছড়াচ্ছে। এই মিথ্যা প্রতিরোধে সত্যই হোক হাতিয়ার। আমরা সত্য দিয়ে মিথ্যাকে রুখে দাঁড়াব। সত্যই হোক আমাদের হাতিয়ার।"

উল্লেখ্য, আকাশ দাস নামের এক কিশোরের ফেসবুকে একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে গত মঙ্গলবার রাতে মংলারগাঁও গ্রামে হিন্দুদের বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটে। পরে অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ। পরদিন পুলিশ বাদী হয়ে সাইবার নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত কিশোর মঙ্গলবার বিকেলে ফেসবুকে আরেকজনের পোস্টের মন্তব্যের ঘরে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগে অভিযুক্ত হন। এর প্রেক্ষিতে স্থানীয় কিছু লোকজন রাতে মিছিল করেন। এর আগেই কিশোরকে পুলিশ হেফাজতে নেয়। মিছিল থেকে ক্ষুব্ধ জনতা অভিযুক্ত কিশোরের বাড়িঘরসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কয়েকটি বাড়িঘর ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। পরে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় জনতার তৎপরতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য