শীতের ঠান্ডা বাতাস পিরোজপুরের নাজিরপুরে শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে প্রকৃতিতে আসার সাথে সাথে বুননকারীদের তুলা ছাঁটাই ও লেপ, তোশক, জাজিম তৈরির কাজে বেড়েছে কর্মচাঞ্চল্য। দিন-রাত সুই, সুতো আর ফিটিংয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। শীত যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই লেপ-তোশকের কদর বাড়ছে। সেই সাথে বেড়েছে কারিগরদের কদরও। কেউ তুলা দিয়ে, কেউ পুরনো লেপ ভেঙে তৈরি করছে লেপ, তোশক, জাজিম ও বালিশ।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মতো লেপ-তোশক ও জাজিম তৈরির খরচও বাড়ছে। প্রতি কেজি কার্পাস তুলা ৪০০ টাকা, শিমুল তুলা ৪৫০ টাকা, আঙগুরি তুলা ১২০ টাকা এবং জুট ৫০ টাকা। লেপ তৈরির জন্য আসা দিনমজুর লিটন হোসেন (৪২) জানান, "আমরা গরিব মানুষ, কম্বল কেনার সামর্থ্য আমাদের নাই। দিনের বেলা শীত কম থাকলেও রাতে অনেক শীত পড়ে, তাই অল্প টাকায় লেপ তৈরি করে নিচ্ছি।"
বাদশা শেখ (৩০) বলেন, "শীতের মোকাবেলায় আগেভাগেই লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। আমি একটি নতুন আর একটি পুরনো লেপ নতুন করে বানাচ্ছি। তবে তুলনামূলক খরচটা অনেক বেশি হচ্ছে।"
কারিগর সুমন ইসলাম জানান, "আমরা একটি লেপ বা তোশক তৈরিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা মজুরি নিই। আকার অনুযায়ী এটি তৈরিতে ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগে।"
ব্যবসায়ী আজীম হাওলাদার বলেন, "পুরো বছরের চেয়ে শীতের এই মৌসুমে তিন মাস বেচাকেনা একটু বেশি হয়। তাই সাধারণ মানুষের কথা ভেবে গুণগত মান বজায় রেখে রেডিমেড জিনিসও তৈরি করে বিক্রি করছি। তবে সবকিছুর মূল্য বৃদ্ধির কারণে এবছর লেপ, তোশক, জাজিম ও বালিশ তৈরির খরচ আগের তুলনায় বেড়েছে। প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবং কারিগরদের বেতন বেশি দেওয়ার কারণে লেপ-তোশকের দাম একটু বেশি।"
খাদিজা বেগম নামের এক নারী জানান, "আগের থেকে সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। তুলা, কাপড়ের পাশাপাশি মজুরির দামও বেড়েছে। তারপরও লেপ বানাতে হবে, কারণ সামনে বেশি শীত আসবে।"
দোকানদার ও কারিগর সাহাবুদ্দিন মিনা জানান, "শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লেপের চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। তবে আগের মতো বেচাকেনা নাই। তবুও আমি আশাবাদী, সামনের দিনগুলোতে বেচাকেনা বাড়বে।"
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য