সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের সংবাদ সম্মেলন

জেলা প্রশাসকের অকথ্য ভাষায় গালাগাল

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
জেলা প্রশাসকের অকথ্য ভাষায় গালাগাল

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ উঠেছে। বুধবার সন্ধ্যায় আহছানিয়া মিশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জলকে তার অফিসে ডেকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করার অভিযোগ করা হয়েছে। এই ঘটনার বিচার দাবিতে বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন মিশনের নেতৃবৃন্দ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল বলেন, জেলা প্রশাসক তাকে অফিসে ডেকে প্রথমেই চিৎকার করে বলেন, “ডিসি মোস্তাক আহমেদকে চেনেন? ‘হু আর ইউ’ ইবলিস কোথাকার!” এমনকি একপর্যায়ে মারতে উদ্যত হন এবং তুই-তোকারি শুরু করেন। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বিষ্ণুপদ পাল তাকে ডিসির রুম থেকে বের করে দেন।

ঘটনার প্রেক্ষাপট

মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল জানান, তিনি সাতক্ষীরা আহছানিয়া মিশনের ২৫ সদস্যের কার্যনির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই কমিটির সভাপতি পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক। ১৯৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মিশনের কমিটি নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। তবে সম্প্রতি জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদ কোনো আলোচনা বা অনুমোদন ছাড়াই চলমান কমিটি ভেঙে এডহক কমিটি গঠন করেন। বিষয়টি জানতে পেরে ২১ জন সদস্য পূর্ণবিবেচনার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করেন।

উজ্জল বাধ্য হয়ে মিশনকে রক্ষার স্বার্থে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করেন। হাইকোর্ট ১৫ ডিসেম্বর এডহক কমিটি স্থগিত করে রুল জারি করেন। কিন্তু এরপরও জেলা প্রশাসক, হাইকোর্টের আদেশ উপেক্ষা করে, মিশনের সম্পত্তি ও কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করেন।

মিশনের ওপর চাপ ও দুর্নীতি

মোস্তাফিজুর রহমান অভিযোগ করেন, মিশনের সম্পদ দখল ও অপব্যবহার করার জন্য একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন ধরে তৎপর। মিশনের তহবিল থেকে ৪০ লাখ টাকা তুলে ভূয়া জমি কেনা, ৭টি পদে অবৈধ নিয়োগের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য ও দাবি

মিশনের কার্যনির্বাহী কমিটি জেলা প্রশাসকের এমন আচরণের নিন্দা জানিয়ে তার বিচার দাবি করেছেন। মিশনের নেতৃবৃন্দ আদালতের আদেশ লঙ্ঘন ও মিশনের সম্পদ নিয়ে দুর্নীতি বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করার পরও কোনো প্রতিকার পাননি।

সংবাদ সম্মেলনে মিশনের জিএম আব্দুল হামিদ, জিএম মাহবুবর রহমান, আব্দুল খালেকসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তারা জেলা প্রশাসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মিশনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য