প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে সড়কপথে ধোপাজান নদীর বালু-পাথর লুটপাটের সংবাদ ১৪ ডিসেম্বর দৈনিক সবুজ সিলেটসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশের পর তৎপর হয়ে ওঠে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন, বিজিবি ও পুলিশ প্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সুনামগঞ্জের ধোপাজান চলতি নদীতে লুটপাট বন্ধে সাম্প্রতিক সময়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে সাধুবাদ জানিয়েছেন সুধীমহল এবং এই তৎপরতা অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুলিশি তৎপরতায় বৃহস্পতিবার ১৯ ডিসেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত ধোপাজান নদীর বালু-পাথর লুটপাট বন্ধ রয়েছে। বালু-পাথর পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রলি জব্দ করেছে থানা পুলিশ।
সদর উপজেলার মুসলিমপুর গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানান, ধোপাজান নদীর বালু-পাথর আগে নদীপথে লুটপাট হলেও পরে কৌশল পাল্টে সড়কপথে লুটপাট শুরু হয়। তবে গত ১৪ ডিসেম্বরের পর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জোর তৎপরতায় বালু-পাথর লুটপাট এখন বন্ধ রয়েছে। পুলিশের গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছে লুটপাটকারী সিন্ডিকেট।
সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ শেরগুল আহমেদ পুলিশ প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, বালু-পাথর লুটপাটে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট জড়িত রয়েছে। তাই নিরীহ সাধারণ শ্রমিকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানার নবাগত ওসি মো. আবুল কালাম বলেন, আমি সপ্তাহখানেক হলো সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় যোগদান করেছি। যোগদানের পর ধোপাজান নদী থেকে বালু-পাথর লুটপাট রোধে অভিযান পরিচালনা করে বালু-পাথর পরিবহনে ব্যবহৃত ট্রলি জব্দ করা হয়েছে। লুটপাটকারীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। অবৈধভাবে বালু-পাথর লুটপাট বন্ধ করতে পুলিশ সবসময় তৎপর রয়েছে জানিয়ে নবাগত ওসি বলেন, এসব অবৈধ লুটপাটে জড়িতদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের পর থেকেই সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার ধোপাজান চলতি নদী ইজারাবিহীন আছে। তারপরও একটি চক্র নানা কৌশলে বিগত সরকারের আমলে অবৈধভাবে বালু-পাথর উত্তোলন করে। পট পরিবর্তনের পর এই মাত্রা আরও বেড়ে যায়।
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের কাইয়ারগাঁওসহ সীমান্ত এলাকার অনেক গ্রামের পাশের এ নদীতে গভীর রাতে পরিবেশ বিধ্বংসী ড্রেজার ও সেভ মেশিন দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন চলছে অবৈধভাবে। ফলে ড্রেজারের তাণ্ডবে বারকী নৌকা দিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের আয়-রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে অনেক আগেই। বৈধভাবে সনাতন পদ্ধতিতে বেলচা, বালতি দিয়ে বালু-পাথর উত্তোলন করলে পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না এবং সাধারণ মানুষ কাজ করে সংসার চালাতে পারে। সরকার যদি ক্রয় পদ্ধতির মাধ্যমে ধোপাজান নদীর বালু-পাথর উত্তোলন করত, তাহলে ভালো হতো। এমনটাই দাবি করছেন বারকী শ্রমিক সংঘের নেতৃবৃন্দসহ সচেতন মহল।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য