সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে

আগুনে পুড়ে যাওয়া ৬টি পরিবারকে গৃহ নির্মাণের টাকা দিলেন জেলা প্রশাসক

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
আগুনে পুড়ে যাওয়া ৬টি পরিবারকে গৃহ নির্মাণের টাকা দিলেন জেলা প্রশাসক

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে প্রতিপক্ষের দেয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া ৬টি ঘর নির্মাণের জন্য প্রতিটি পরিবারকে নগদ ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেয়া হয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া রবিবার রাতে সীমান্তের মৌলারপাড় গ্রামে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রফিক মিয়া, রিপন মিয়া, ফজলু মিয়া ও মোছাম্মৎ সানু আক্তারের হাতে নগদ টাকা ও চেক তুলে দেন।

ক্ষতিগ্রস্ত ৬টি পরিবারের নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধসহ ২৩ জন সদস্য দীর্ঘ ৯ দিন যাবত রাতে স্বজনদের বাড়িতে এবং দিনের বেলায় খোলা আকাশের নিচে দিন পার করছেন। তাঁদের অবর্ণনীয় কষ্ট দেখে জেলা প্রশাসক রাতের বেলায় সীমান্ত জনপদের প্রত্যন্ত পল্লীতে হাজির হয়ে আগুনে পোড়া বাড়িঘর পরিদর্শন করে তাঁদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে নগদ টাকা সহায়তা দেন।

এর আগে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব পরিবারে খাদ্য সহায়তাসহ শীতবস্ত্র দেয়া হয়।

উল্লেখ্য, ১৪ ডিসেম্বর দুপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের লোকজন ৬টি পরিবারের বসতঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দেয়। এ ঘটনায় দোয়ারাবাজার থানায় ঝর্ণা বেগম নামের ক্ষতিগ্রস্তদের স্বজন বাদী হয়ে হামলায় জড়িত ৫০ জনের নামে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় আদালত থেকে ২৬ জন আসামি জামিনে মুক্ত হলেও অন্যতম অভিযুক্তদের এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি থানা পুলিশ।

ক্ষতিগ্রস্ত ফজলু মিয়া বলেন, "এতো রাতে জেলা প্রশাসক আমাদের প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে গৃহ নির্মাণের টাকা দেবেন, এটি কেউ ভাবতেও পারেনি।"

ক্ষতিগ্রস্ত রফিক মিয়া বলেন, "আমাদের মৌলারপাড় গ্রাম মেঘালয় পাহাড়ের কাছে সীমান্ত ঘেঁষা। জেলা শহর থেকে দীর্ঘ পথ পেরিয়ে সুরমা নদী পার হয়ে দুর্গম গ্রামে আসতে হয়। তাই বিকেল হলেই এ গ্রামে কেউ আসে না। সেখানে জেলা প্রশাসক রাতে আমাদের গৃহ নির্মাণের জন্য টাকা দিয়েছেন। এটি ভাবতেই আমাদের খুব ভালো লাগছে।"

হাজেরা বেগম বলেন, "জেলা প্রশাসক গভীর রাতে আমাদের বাড়িতে আসবেন—এটি গ্রামবাসী শুরুতে বিশ্বাসই করেনি। কিন্তু রাত ৮টার দিকে যখন জেলা প্রশাসকের গাড়িসহ তিনটি গাড়ি আমাদের আগুনে পোড়া বসতভিটার আঙিনায় আসে, তখন সবাই অবাক হয়ে যান। এটি আমাদের কাছে অকল্পনীয় ঘটনা।"

জেলা প্রশাসক ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন।

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জাহিদুল হক মামলার প্রধান আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার আশ্বাস প্রদান করেন।

এসময় অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল, দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার নেহের নিগার তনু এবং মৌলারপাড় গ্রামের বাসিন্দারা উপস্থিত ছিলেন।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য