সচিবালয়ে আগুন নেভানোর কাজে গিয়ে ট্রাকচাপায় নিহত ফায়ার ফাইটার সোহানুর জাহান নয়ন ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র অবলম্বন। কৃষক বাবা আক্তারুজ্জামানের জীবনের সব আশা-ভরসা ছিল ছেলেকে ঘিরে। তিনি স্বপ্ন দেখতেন, ছেলের চাকরির মাধ্যমে পরিবারটি একটু সুখে-শান্তিতে দিন কাটাবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পূরণের আগেই একটি ঘাতক ট্রাক তাদের সবকিছু কেড়ে নিল।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের ছড়ান আটকুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা আক্তারুজ্জামান ও নার্গিস দম্পতির একমাত্র ছেলে ছিলেন নয়ন। বড় বোনের বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর, নয়নই ছিলেন পরিবারের একমাত্র ভরসা। ২০২২ সালে ফায়ার সার্ভিসে চাকরি হওয়ার পর থেকে পরিবারে কিছুটা স্বচ্ছলতা ফিরেছিল। কিন্তু সেই সুখ বেশি দিন স্থায়ী হলো না। নয়নের মৃত্যুতে পরিবারটি এখন দিশেহারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য জিয়াউল হক জুয়েল জানান, নয়নের পরিবার নদীভাঙনের শিকার। তাদের নিজস্ব জমিজমা বলতে কিছুই নেই। অনেক কষ্টে বাবা-মা তাকে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করিয়েছেন। কিন্তু একমাত্র আয়ের উৎস ছেলেকে হারিয়ে পরিবারটি এখন অসহায়।
ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা আক্তারুজ্জামান বলেন, "বাবার কাঁধে সন্তানের লাশ অনেক ভারী। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল তাকে ঘিরে। সবকিছু শেষ হয়ে গেল।"
অন্যদিকে, মায়ের অবস্থাও শোচনীয়। একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে পাগলপ্রায় হয়ে পড়েছেন মা নার্গিস আক্তার। তাদের এই শোকে প্রতিবেশীরাও মর্মাহত।
ইউপি চেয়ারম্যান তারিকুল ইসলাম সরকার বলেন, "নয়নের পরিবার অত্যন্ত গরিব। এভাবে অকালে তার চলে যাওয়াটা মেনে নেওয়া খুব কষ্টের। আমি সরকারিভাবে ওই পরিবারের জন্য সাহায্যের জোর দাবি জানাই।"
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য