সচিবালয়ের গোপন নথি নয়

বরিশালে আটক দুই ট্রাক কাগজপত্রের প্রকৃত ঘটনা

বরিশাল ব্যুরো
বরিশালে আটক দুই ট্রাক কাগজপত্রের প্রকৃত ঘটনা

বরিশাল সদর উপজেলার কাগাশুরা গ্রামের স্থানীয় লোকজন সন্দেহ করেন যে, দুটি ট্রাকে সচিবালয়ের গোপন নথি বহন করা হচ্ছে। এই সন্দেহে তাঁরা ট্রাকগুলো আটক করেন এবং কাউনিয়া থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে ট্রাক দুটি আটক করে। তবে পরে জানা যায়, এগুলোতে কোনো গোপন নথি ছিল না; বরং বরিশাল শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের পুরোনো এবং বাতিল কাগজপত্র ছিল। পরবর্তীতে ট্রাক দুটি অধিদপ্তরের অফিসে ফেরত আনা হয়।

কাগজপত্র ধ্বংসের প্রক্রিয়া:

শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী পুরোনো কাগজপত্র ধ্বংস করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। গত ২৫ নভেম্বর গঠিত এই পাঁচ সদস্যের কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন সহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) আফজাল হোসেন এবং সদস্য সচিব ছিলেন সহকারী হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সহিদুর রহমান। এই কমিটি ১৯৮৯ সাল থেকে রক্ষিত পুরোনো ও বাতিল কাগজপত্র বিনষ্ট করার সুপারিশ করে। এসব কাগজপত্রের মধ্যে বিভিন্ন সময়ের পত্রিকা এবং দরপত্রের নোটিশ অন্তর্ভুক্ত ছিল।

কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী, গত ১৫ ডিসেম্বর বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম একটি অফিস আদেশ জারি করেন। আদেশে বলা হয়, পুরোনো কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ধ্বংস করার দায়িত্ব দেওয়া হলো সহকারী প্রকৌশলী আফজাল হোসেন এবং উপসহকারী প্রকৌশলী মো. ইউসুফকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ছুটির দিনে উপস্থিত থেকে এসব কাগজপত্র পুড়িয়ে ধ্বংস করে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

ঘটনার বিস্তারিত:

এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার শহিদুল ইসলাম জানান, বিধি মোতাবেক পুরোনো কাগজপত্র ধ্বংস করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, এসব কাগজপত্র এবং কিছু ভাঙা আসবাবপত্র জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করে ধ্বংস করার জন্য কাউনিয়া এলাকার ময়লাখোলায় পাঠানো হয়েছিল। তবে, ভাড়াটে শ্রমিক এবং ট্রাকচালক কাগজপত্র ও মালামাল বিক্রি করার চেষ্টা করায় সন্দেহ সৃষ্টি হয়। ঘটনাস্থলে না গিয়ে অন্য জায়গায় যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন ট্রাকগুলো আটক করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় প্রতিনিধির ভূমিকা:

কাউনিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিসুর রহমান জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে স্থানীয় লোকজন ট্রাক দুটি আটক করেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ট্রাক দুটি পুলিশের কাছ থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান। নির্বাহী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পুলিশের কাছে একটি লিখিত বিবরণী জমা দেন।

চরবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জিয়াউল ইসলাম জানান, ট্রাক দুটি এলাকায় সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিল। এতে স্থানীয় লোকজনের সন্দেহ হয় এবং তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে পদক্ষেপ নেন।

পরবর্তী ব্যবস্থা:

শহিদুল ইসলাম জানান, উদ্ধতন কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য