অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং বালু শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের দৃশ্য ধারণ ও সংবাদ প্রচারের জের ধরে, জৈন্তাপুরের একজন সাংবাদিককে হাত কেটে ফেলার হুমকি দিয়েছেন সারিঘাট বারকি শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি আমির আলী।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দৈনিক ইত্তেফাক ও একাত্তরের কথা পত্রিকার জৈন্তাপুর উপজেলা প্রতিনিধি নাজমুল ইসলামকে এই হুমকি দেন আমির আলী। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম জৈন্তাপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি নং-১১৫৬) করেছেন।
সাংবাদিক নাজমুল ইসলাম ও শ্রমিক নেতা আমির আলীর মধ্যে কথোপকথনের একটি চার মিনিট ছয় সেকেন্ডের অডিও সংরক্ষণ করা হয়েছে। অডিওতে আমির আলী বলেন, "তুমি কয়েক হাজার শ্রমিকের পেটে লাথি মারতেছো।" এর জবাবে নাজমুল প্রশ্ন করেন, "এমন কোনো প্রমাণ কি আপনার কাছে আছে যে আমি শ্রমিকদের পেটে লাথি মারছি?" উত্তরে আমির আলী বলেন, "তুমি বালু উত্তোলনের খবর ইউএনও অফিসে দাও, তার সব খবর আমি পাই।" এরপর উত্তেজিত হয়ে তিনি বলেন, "বেশি বাড়াবাড়ি করবা না, করলে তোমার হাত কেটে ফেলে দেব।" তিনি আরও সাংবাদিক নাজমুলের পিতা-মাতাকে নিয়ে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করেন।
এ বিষয়ে শ্রমিক নেতা আমির আলীকে ফোন করলে তিনি দাবি করেন যে নাজমুল তাকে প্রথমে গালি দিয়েছেন, তাই তিনি হুমকি দিয়েছেন। তবে ফোনালাপের অডিওর প্রসঙ্গ তুললে তিনি সদুত্তর দিতে ব্যর্থ হন এবং সারিঘাট বালু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা বলার পরামর্শ দেন।
সারিঘাট বালু ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমেদ এই ঘটনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন এবং জানান, বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান বলেন, "সাংবাদিক নাজমুলের ফোনালাপের অডিও আমরা শুনেছি এবং তিনি একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। আমির আলী প্রথমে আত্মপক্ষ সমর্থন করে কথা বললেও অডিওর বিষয়ে প্রশ্ন করলে ফোন কেটে দেন। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।"
সাংবাদিক নাজমুল ইসলামকে হুমকি দেওয়ার ঘটনায় জৈন্তাপুর উপজেলার সাংবাদিক সমাজ, প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কর্মীরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তারা হুমকিদাতাকে দ্রুত গ্রেফতার এবং এর পেছনে জড়িতদের খুঁজে বের করার জন্য পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য