পুলিশ কর্মকর্তা ছেলে ও পুত্রবধূর ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে বাবার হয়রানি ও প্রতারণার শিকার হয়েছেন বরগুনার সদর উপজেলার লতাকাটা গ্রামের সাধারণ মানুষ। জমি দখল, অর্থ আত্মসাৎ, এবং সন্ত্রাসী গ্রুপের মাধ্যমে সাধারণ জনগণকে নির্যাতনের একাধিক অভিযোগ উঠেছে আব্দুল হাই ওরফে দুলালের বিরুদ্ধে।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) রাতে বরগুনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোসা. হাচিনা বেগম জানান, ২০১২ সালের ১২ মার্চ আব্দুল হাই দুলালের কাছ থেকে বায়নার মাধ্যমে এক একর ২ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। তবে নানা কৌশলে দুলাল টাকা নিলেও জমির কবলা দলিল দিতে অস্বীকার করেন। পরবর্তীতে আদালতের আশ্রয় নিলে বরগুনার সিনিয়র সহকারী জজ আদালত দলিল রেজিস্ট্রি করে দেন। হাচিনা বেগম জমি ভোগদখল করলেও সম্প্রতি দুলাল একটি ভূয়া অঙ্গিকারনামা দেখিয়ে জমির মালিকানা দাবি করেন। বিষয়টি আদালতে গড়ালে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ মামলাটি আমলে নিয়ে বরগুনা থানাকে এজাহার গ্রহণের নির্দেশ দেন।
বালিয়াতলী ইউনিয়নের দক্ষিণ পাতাকাটা গ্রামের মো. আবুল কালাম গাজী অভিযোগ করেন, ২০১৬ সালে দুলালের কাছে জমি বন্ধক রাখার শর্তে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু পরে জমি ভোগদখল করতে গেলে দুলাল মিথ্যা মামলার হুমকি দেন।
মনসাতলী গ্রামের মো. হারুন হাওলাদার জানান, প্রতিপক্ষের সঙ্গে জমি নিয়ে মামলার জন্য আব্দুল হাই অঙ্গিকারনামা নেন। কিন্তু সেই অঙ্গিকারনামা জাল করে দলিল তৈরির মাধ্যমে ২ একর ১৬ শতাংশ জমি দখল করেন। প্রতিবাদ করলে দুলাল ব্যক্তিগত বন্দুক দিয়ে ভয়ভীতি দেখান।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত আব্দুল মালেক হাওলাদার, আনোয়ার হাওলাদার, অরুণ মৃধা ও আল-আমিনসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, আব্দুল হাই দুলালের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও প্রতিকার পাওয়া যায় না। তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেন।
অভিযুক্ত আব্দুল হাই দুলাল তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এগুলো আমার প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্র। জমি সংক্রান্ত বিষয় আদালতে মীমাংসার অপেক্ষায় রয়েছে।”
বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. আব্দুল হালিম বলেন, “অপরাধী যেই হোক, আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আদালতের নির্দেশ বা থানায় অভিযোগ পাওয়া মাত্র ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য