কনকনে শীতে কাঁপছে মানিকগঞ্জ

দুঃশ্চিন্তায় নিম্নআয়ের মানুষ

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
কনকনে শীতে কাঁপছে মানিকগঞ্জ

দেশের মধ্যাঞ্চলের জেলা মানিকগঞ্জের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ। এতে তাপমাত্রা ১২.৫ ডিগ্রির ঘরে নেমে এসেছে এবং পুরোদমে জেঁকে বসেছে শীত। দিনভর কনকনে শীতের কারণে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (০৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় মানিকগঞ্জে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুর ১টায় তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে ১৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়।

তবে সরেজমিনে মানিকগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, রাত থেকে সকাল পর্যন্ত ঘনকুয়াশা এবং দিনভর উত্তরদিক থেকে বয়ে আসা হিমেল হাওয়ায় কনকনে শীতে সাধারণ মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে। কোথাও কোথাও আগুন ধরিয়ে হাত-পা ও শরীর গরম করার চেষ্টা করছে তারা। হঠাৎ শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র ও নিম্নআয়ের মানুষ। তবে পরিবারের চাহিদা মেটাতে অনেকেই শীত উপেক্ষা করেই কাজের সন্ধানে ছুটছেন।

অপরদিকে, তীব্র শীতে অনেকটাই জনশূন্য হয়ে পড়েছে ব্যস্ততম সড়ক ও হাটবাজারগুলো। ভোরে ঘনকুয়াশা থাকার কারণে জেলার বিভিন্ন সড়কগুলোতে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে। শীতজনিত কারণে হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের মধ্যে বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন।

রিকশাচালক জসিম বলেন, "গত তিন দিন ধরে ঠাণ্ডা অনেকটাই বেড়েছে। বাতাসের কারণে হাত-পা অবশ হয়ে যাচ্ছে। রাস্তায় চলাচল করা যাচ্ছে না। যাত্রীর সংখ্যা কমে গেছে, ফলে ঠিকমত রোজগারও হচ্ছে না। তবুও পেটের তাগিদে শীতের মধ্যে আমাদের প্রতিদিন কাজে বের হতে হয়।"

ভ্যানচালক আতোয়ার বলেন, "ঠাণ্ডায় অনেকেই বাড়ি থেকে না বের হওয়ায় লোকজন তেমন পাওয়া যাচ্ছে না। তবে যে হারে ঠাণ্ডা বাড়ছে, তাতে সবার চলাচল করতে খুব সমস্যা হচ্ছে।"

মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডের হকার আবু মূসা বলেন, "শীত বেড়ে যাওয়ার কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের সংখ্যা কমে গেছে। ফলে বেচাবিক্রিও কমে গেছে। এতে আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।"

এদিকে, মানিকগঞ্জের আরিচায় অবস্থিত আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম জানান, "সকাল ৯টায় মানিকগঞ্জের আরিচায় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দুপুরে তাপমাত্রা কিছুটা বেড়ে ১৩.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।"

অপরদিকে, মানিকগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ আল্পনা আক্তার বলেন, "সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ১২ জন ডায়রিয়া রোগী ভর্তি হয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু।"

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য