২০১৪ সালের ১১ জানুয়ারি সিলেট সিভিল সার্জন কার্যালয়, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, এবং বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮৫ জন জনবল সরবরাহের জন্য সরকার আউটসোর্সিং অ্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিস নামে একটি প্রতিষ্ঠান চুক্তিবদ্ধ হয়। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত সম্পাদিত চুক্তি অনুযায়ী, কোম্পানি জনবলের বেতন-ভাতার ওপর পাঁচ শতাংশ হারে সার্ভিস ফি প্রাপ্য হবে। তবে নিয়োগকৃত জনবলের কাছ থেকে কোনো প্রকার অর্থ আদায়ের বৈধতা কোম্পানির নেই।
নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই কোম্পানির বিরুদ্ধে নিয়োগপ্রাপ্ত জনবলের কাছ থেকে প্রায় কোটি টাকার বেশি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। ভোরের আকাশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ভুক্তভোগী কয়েকজন জানান, সরকার আউটসোর্সিং অ্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিস কোম্পানি তিন বছরের কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে এক লক্ষ বিশ হাজার থেকে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থ আদায় করেছে। অনেকের সরলতার সুযোগ নিয়ে চাকরি স্থায়ী হবে বলে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে এসব অর্থ আদায় করা হয়।
সিলেট সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যানুসারে, কোম্পানির চুক্তির মেয়াদ ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত। এখনো এই চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়নি। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করলেও এখন পর্যন্ত কোনো বেতন ভাতা পাননি।
সরকার আউটসোর্সিং অ্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান সেলিমের সঙ্গে চুক্তি সম্পাদিত হলেও, কোম্পানির কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করেন জাহাঙ্গীর আলম। সিলেট সিভিল সার্জন অফিসের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, মো. জাহাঙ্গীর তাদের সাথে কোম্পানির প্রতিনিধি হিসেবে যোগাযোগ করেন এবং অভিযোগ রয়েছে যে তিনি অর্থের বিনিময়ে জনবল নিয়োগ দেন।
গোয়াইনঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ১১ জন জানান, তিন বছরের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রতিজনের কাছ থেকে ১ লক্ষ ২০ হাজার থেকে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থ আদায় করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করলেও তারা কোনো বেতন পাননি। বিয়ানীবাজার, জকিগঞ্জ, এবং বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভুক্তভোগীদের সাথে আলাপকালে এই অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।
সরকার আউটসোর্সিং অ্যান্ড সিকিউরিটি সার্ভিসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। কোম্পানির সিলেটের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. জাহাঙ্গীর বলেন, তিনি কোম্পানির অংশীদার হলেও জনবল নিয়োগে কোনো টাকা নেননি এবং এসকল অভিযোগ মিথ্যা।
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী বলেন, আউটসোর্সিং জনবল নিয়োগে তাদের সরাসরি কোনো হাত নেই। তবে অর্থ আদায়ের অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য