নবীনগর উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে এখন জমির প্রায় সব জায়গায় হলুদের সমারোহ। স্বল্প সময়ে বাড়তি ফসল হিসেবে এই জনপদে প্রতিবছরই সরিষা চাষ বাড়ছে। এ বছর সরকারি প্রণোদনার আওতায় ২,৪০০ কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ এবং রাসায়নিক সার বিতরণ করা হয়েছে। ফলে গত বছরের চেয়ে এ বছর সরিষা চাষে আশানুরূপ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ উপজেলায় কৃষকেরা রবি মৌসুমে সরিষা চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার প্রত্যাশা করছেন।
উপজেলার বড়াইল, সলিমগঞ্জ, রছুল্লাবাদ, বীরগাঁও, বিটঘর, নাটঘর, কৃষ্ণনগর ইউনিয়নে সরিষার আবাদ সবচেয়ে বেশি হয়। এ বছর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪,১৫০ হেক্টর, কিন্তু চাষ হয়েছে ৪,০৫০ হেক্টর জমিতে, যা গত বছরের চেয়ে ১৫ হেক্টর বেশি। তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প, ফ্রি প্রকল্প, পার্টনার প্রকল্প এবং রাজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন পর্যায়ের প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার, বীজ এবং বালাইনাশক প্রদান করা হয়।
প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ৪-৫ মন সরিষা উৎপাদন হয়। প্রতি মন সরিষার বর্তমান বাজারমূল্য ২,৮০০-৩,৬০০ টাকা। বীরগাঁও ইউনিয়নের নজরদৌলত গ্রামের জাকির হোসেন এবং মানিক মিয়া ১০০ শতক জমিতে, নাটঘর ইউনিয়নের কৃষক আমানউল্লাহ ৯ বিঘা জমিতে সরিষা আবাদ করেছেন। ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের কৃষক কাউছার জানান, এ বছর তিনি ৩ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন।
কোনো কোনো জমিতে তাজা সরিষা ফুল ফুটেছে, আবার কোথাও ফুল ঝরতে শুরু করেছে। চাষিরা জানান, মাঠ পর্যায়ে উপজেলা কৃষি অফিসের নিয়মিত পরামর্শ পাচ্ছেন এবং তারা আশা করছেন যে এবার ফলন ভালো হবে। তাজা সবুজ সরিষা গাছে হলুদ ফুলে ভরে ওঠায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটতে শুরু করেছে।
উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার জাহাঙ্গীর আলম লিটন জানান, কৃষকদের ভালো বীজ সঠিক সময়ে সরবরাহ করা হয়েছে। সরিষার সার এবং বালাইনাশক ব্যবহারে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে উপসহকারী কৃষি অফিসাররা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। তিনি আশা করেন, এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য