চমেক হাসপাতালে ফের সক্রিয় দালাল চক্র

অসহায় রোগী-স্বজনরা

চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি
চমেক হাসপাতালে ফের সক্রিয় দালাল চক্র

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ফের বেড়েছে দালালদের উৎপাত। এরা বিভিন্ন প্রলোভনে রোগীদের ভাগিয়ে নিয়ে যায় বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতালে। ফলে সর্বস্বান্ত হয় রোগী ও স্বজনরা। সবচেয়ে বেশি উৎপাত থাকে গাইনী ওয়ার্ড ঘিরে। এবার সেই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে হাতেনাতে ১১ দালালকে আটক করেছে র‌্যাব-৭।

রোববার (১৯ জানুয়ারি) সকালে ঝটিকা অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। তবে তাদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

জানা যায়, আটক ১১ জনের মধ্যে তিনজনকে ১৫ দিন ও ৫ জনকে সাত দিন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া অপর ৩ জনকে এক হাজার টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।

অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইউসুফ হাসান জানান, চমেক হাসপাতাল থেকে ১১ জনকে আটক করে র‌্যাব-৭। আটকদের মধ্যে ৮ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও ৩ জনকে জরিমানা করা হয়েছে।

র‌্যাব-৭ এর উপ-অধিনায়ক মেজর সানরিয়া চৌধুরী জানান, সরকারি হাসপাতালের দালালদের উৎপাত বন্ধে এই ধরনের অভিযান চলমান থাকবে।

এর আগে গেল বছরের ২০ মার্চ (বুধবার) একই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে ৩৯ দালালকে আটক করে র‌্যাব-৭। অভিযানে আটকদের ১৪ জনকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ও ২৫ জনকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ১ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এছাড়া একই বছরের বিভিন্ন সময়ে নারী-পুরুষসহ বিভিন্ন দালালকে আটক করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। কিন্তু এতকিছুর পরও কমেনি সেই দালালদের উৎপাত। তাদের খপ্পড়ে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছে অসহায় ও গরীব রোগীরা।

জানা গেছে, অভিযানের পর হাসপাতালে মাসখানেক কম থাকে দালালদের উৎপাত। কিন্তু অভিযান শিথিলতার সুযোগ নিয়ে ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে দালাল চক্রের সদস্যরা। এসব দালাল বিভিন্ন ফার্মেসি, ক্লিনিক, হাসপাতালের হয়ে সেখানে কাজ করে। যারা রোগী ভাগিয়ে নিতে পারলে পায় মোটা অংকের কমিশন।

ভুক্তভোগী রোগী ও স্বজনরা জানায়, সরকারি হাসপাতালের ডাক্তার রোগীদের ব্যবস্থাপত্রে পরীক্ষা-নিরীক্ষা লিখে দেওয়ার পর বের হলে স্বল্প খরচে পরীক্ষা-নিরীক্ষার করে দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন প্রলোভনে তাদের প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গিয়ে সর্বশান্ত করে। রোগী নিয়ে যেতে পারলে দালালরা পায় কমিশন।

এদিকে, সরকারি হাসপাতালগুলোর এই ধরনের অভিযান অব্যাহত রেখে দালালদের উৎপাত বন্ধের দাবি জানিয়েছে রোগী ও স্বজনরা।

মন্তব্য