শেরপুরে

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদ

উপজাতি সেনা সদস্যের সংবাদ সম্মেলন

শেরপুর প্রতিনিধি
বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদ

শেরপুরে মিথ্যা অভিযোগের প্রতিবাদে অবসরপ্রাপ্ত সনেন্দ্র সিমসাং নামে এক উপজাতি সেনা সদস্য সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাতে শহরের নির্ঝর রেস্তোরাঁ হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য পাঠ করেন সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোরের অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট সনেন্দ্র সিমসাং।

এ সময় তিনি তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, “আমি সনেন্দ্র সিমসাং, ২০১৩ সালে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার কোর থেকে সার্জেন্ট পদে অবসর নিয়েছি। আমার সাবেক স্ত্রী আর্নিকা দাংগ একটি গণমাধ্যমে তার বক্তব্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করেন, যা আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এ সংবাদে আমার সাবেক স্ত্রী যে অভিযোগগুলো করেছেন তা মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, আমার প্রথম স্ত্রী ৩ সন্তান রেখে মারা যাওয়ার পরে ২০০৬ সালে আর্নিকা দাংগকে আমি দ্বিতীয় বিয়ে করি। চাকরিরত অবস্থায় মিশনের টাকা দিয়ে শেরপুর শহরের বাগবাড়ী মহল্লায় ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করি। কিছুদিন আমাদের দাম্পত্য জীবন ভালোভাবে চললেও ২০১৩ সালে চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর পেনশনের টাকা এবং ক্রয়কৃত জমিতে বাসা নির্মাণের বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য হয়। এরপরও আমি পেনশনের টাকা দিয়ে বাসা নির্মাণ করি।

অন্যদিকে, আর্নিকা দাংগ আমার তিন লক্ষ সত্তর হাজার টাকা বাবার বাড়ি জমি কিনবে বলে বিভিন্ন অজুহাতে হাতিয়ে নেয়। পরে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর্নিকা দাংগ বাসা থেকে আমাকে তাড়িয়ে দেয় এবং বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। সেই সময় আওয়ামী লীগের সাংসদ ফজলুল হক চাঁন ও অন্যান্য নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় আমাকে তিনবার জেলে পাঠায় এবং দুই বছর যৌতুক মামলায় সাজা দেয়। আমাদের গারো আদিবাসীদের আইনে এটি নেই, তবে মামলাটি এখনো চলমান।

২০১৭ সালের ১৫ জুলাই নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে আর্নিকা দাংগকে ডিভোর্স দিই। পরবর্তীতে আমার অংশটুকু আমার মেয়ে স্বর্ণালী ডিওকে ১.৬৭ শতাংশ জমি দলিল করে দিই। তারপরও আর্নিকা দাংগ জমিটি বেদখল করে রেখেছে।

৫ আগস্ট দেশের পট পরিবর্তনের পর জমিটি উদ্ধারের জন্য শেরপুর সেনা ক্যাম্পে এবং সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করি। সেনা ক্যাম্প কর্তৃপক্ষ আমাকে শেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হযরত আলীর কাছে পাঠান। হযরত আলী জমির বিস্তারিত ঘটনা শুনে বাগবাড়ী মহল্লার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি সমাধানের অনুরোধ করেন।

পুলিশের কাছে অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমাদের দু'পক্ষকে এসআই শাহ আলম ফাঁড়িতে ডেকে আনেন। স্বর্ণালীর অংশ জানুয়ারির মধ্যে বায়নাপত্র করার বিষয়ে আর্নিকা দাংগ মুচলেকা দেয়। গত ৪ জানুয়ারি ৫০ হাজার টাকা বায়নাপত্র করেন। এরপরও অযথা হয়রানির উদ্দেশ্যে আর্নিকা দাংগ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক হযরত আলী এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে এবং ভিডিও ভাইরাল করে। এটি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা।

এই পারিবারিক ঘটনায় বিএনপি নেতৃবৃন্দের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। হযরত আলীর মতো একজন গণ্যমান্য ব্যক্তিকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য আমি এর নিন্দা ও ধিক্কার জানাই।”

উল্লেখ্য, একটি গণমাধ্যমে আর্নিকা দাংগ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক মো. হযরত আলীর বিরুদ্ধে জমি দখলের মিথ্যা অভিযোগ এনে বক্তব্য দেন। এই প্রেক্ষিতে তার সাবেক স্বামী অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য সনেন্দ্র সিমসাং সত্য ঘটনা উন্মোচনের জন্য এই সংবাদ সম্মেলন করেন।

মন্তব্য