জামালপুরে

দুই ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা

জামালপুর প্রতিনিধি
দুই ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা

শিশু-কিশোরদের বিকাশের অন্যতম বাধা, মারাত্মক সামাজিক ব্যাধি বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে অঙ্গীকারের মাধ্যমে জামালপুরে দুইটি ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই ঘোষণা দেন জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিন্নাত শহীদ পিংকী।

জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ও লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নকে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করতে ওয়ার্ল্ড ভিশন ও উন্নয়ন সংঘ-এর মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রাম এক আলোচনা সভার আয়োজন করে। উন্নয়ন সংঘের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল আলম মোল্লা-এর সভাপতিত্বে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিন্নাত শহীদ পিংকী।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া ভয়ঙ্কর সামাজিক ব্যাধি বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব নয়। কিশোর-কিশোরীদের প্রতি অভিভাবকদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে এবং তাদের পড়ালেখার পাশাপাশি ভুল কাজ থেকে বিরত রাখতে সচেতন থাকতে হবে। তিনি আরও বলেন, যদি শিশুদের যোগ্য মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তবে বৃদ্ধ বয়সে বাবা-মাকে অবহেলার শিকার হতে হবে না।

তিনি আরও জানান, উপজেলা প্রশাসন, সদর থানা পুলিশ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক অধিদপ্তর, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ, জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রাম, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ, উন্নয়ন সংঘ, ইউএনডিসি, ভিডিসি, শিশু ফোরাম, যুব ফোরাম ও ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের সহযোগিতায় বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কার্যক্রম চলমান থাকবে।

এ সময় তিনি ঘোষণা করেন, আমি সদর উপজেলার দুইটি ইউনিয়ন—শরিফপুর ও লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাল্যবিয়ে মুক্ত ঘোষণা করছি।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সাল মো. আতিক, ওয়ার্ল্ড ভিশনের অ্যাডভোকেসি সমন্বয়কারী তানজিমুল ইসলাম, ওয়ার্ল্ড ভিশনের এসিও’র জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক সেবাস্টিয়ান পিউরিফিকেশন, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম, কর্মসূচি পরিচালক মুর্শেদ ইকবাল, ওয়ার্ল্ড ভিশন এপির এরিয়া ম্যানেজার বিমল জেমস কস্তা এবং উন্নয়ন সংঘের জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক মিনারা পারভীন।

বক্তারা বলেন, বাল্যবিয়ে শিশুদের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দেয়। এটি তাদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশ ব্যাহত করে এবং গর্ভধারণজনিত জটিলতায় অনেক মেয়ের মৃত্যু ঘটে। তাই সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষকে সচেতন হতে হবে।

অনুষ্ঠানে বাল্যবিয়ে মুক্ত ইউনিয়ন ঘোষণার ফলক উন্মোচন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ বিষয়ক বিভিন্ন কার্যক্রমের তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং "বাল্যবিয়ে কে ‘না’ করুন" অঙ্গীকার বোর্ডে অতিথিদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়।

মন্তব্য