মানিকগঞ্জে চাঁদাবাজির অভিযোগকে ধামাচাপা দিতে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত ২৮ জানুয়ারি, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় বেউথা ব্রিজ সংলগ্ন ‘টি ইফেক্ট’ রেস্টুরেন্ট তখনো খোলা হয়নি। এ সময় এক তরুণী ও এক যুবক রেস্টুরেন্টে গিয়ে কাউন্টারে অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ রেস্টুরেন্টের সাবেক ম্যানেজার আজিজুল, পানি ব্যবসায়ী মোবারক, মাদকসেবী খোকন ও নামধারী সাংবাদিক তুষার সেখানে গিয়ে তাদের জোরপূর্বক একটি কক্ষে ঢুকিয়ে বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে তারা দাবি করে, রেস্টুরেন্টে অসামাজিক কাজ চলছিল, এবং সেই অভিযোগে ভিডিও ধারণ করা হয়।
এরপর রেস্টুরেন্টের বর্তমান ম্যানেজার জাকারিয়া খানের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা না দিলে বিষয়টি সদর থানা পুলিশকে জানানো হবে বলে হুমকি দেওয়া হয়। পরে এসআই মোক্তার হোসেন ঘটনাস্থলে গেলে তিনি কোনো অসামাজিক কাজের সত্যতা পাননি এবং ফিরে আসেন।
এসআই মোক্তার হোসেন বলেন, "ঘটনাস্থলে গিয়ে অসামাজিক কাজের কোনো সত্যতা না পেয়ে চলে আসি। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে চাঁদাবাজদের সতর্ক করে।"
রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জাকারিয়া খান জানান, "পুলিশ চলে যাওয়ার পর তারা আমাকে মারধর করে এবং নগদ ৩ হাজার টাকা ও বিকাশের মাধ্যমে আরও ২ হাজার টাকা নিয়ে নেয়। এরপর ৫০ হাজার টাকা না দিলে প্রাণনাশের হুমকি দেয়। আমি মানিকগঞ্জ সেনা ক্যাম্পে ঘটনাটি জানালে সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে মোবারক ও তুষারকে আটক করে এবং তাদের করা ভিডিও জব্দ করে। তবে আজিজুল, খোকনসহ অন্যরা পালিয়ে যায়।"
ওইদিনই রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার জাকারিয়া মানিকগঞ্জ সদর থানায় ৬ জনের নাম উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তরা হলেন—১. মো. আজিজুল (৪০)২. মো. মোবারক হোসেন (৩৮)৩. মো. নাসির (৩৫)৪. মো. আয়নাল (৩৫)৫. মো. খোকন (৩৬)৬. মো. কালিদাস (৩৬)
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, "রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার একটি অভিযোগ করেছেন। আবার এলাকাবাসী রেস্টুরেন্ট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
রেস্টুরেন্ট মালিকের অভিযোগ, চাঁদাবাজির ঘটনা ধামাচাপা দিতে রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ‘টি ইফেক্ট’ রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে অসামাজিক কাজের অভিযোগ তুলে একটি মানববন্ধন করে অভিযুক্ত চক্রটি।
রেস্টুরেন্ট মালিক জনি বলেন, "আজিজুল দীর্ঘদিন আমার রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার ছিল। ছয়-সাত মাস আগে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। এরপর থেকেই সে রেস্টুরেন্টের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। হয়তো কোনো মহলের ইন্ধনে সে রেস্টুরেন্টটি দখলের চেষ্টা করছে। আমি প্রশাসনের কাছে সঠিক বিচার চাই।"
মন্তব্য