রাজধানীর তুরাগ থানার চন্ডালভোগ এলাকায় মসজিদের মিলাদ মাহফিলের টাকা তোলাকে কেন্দ্র করে কৃষক লীগ নেতার বাড়িতে হামলা হয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকের এ হামলার সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আহত হন তুরাগ থানা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক রিপন হোসেন (৩৫), তার ছোটভাই লিটন হোসেন (২৪), বন্ধু বিল্লাল হোসেন (২৮) ও বাড়ির ভাড়াটিয়া আলাউদ্দিন (৪০)।
প্রথমে তাদের উদ্ধার করে উত্তরার একটি বেসরকারি হাসপাতালে, পরে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ্ মাস্টার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বিল্লালের অবস্থা আশঙ্কাজনক মনে হলে তাকে রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুলিশের উত্তরা জোনের উপ-কমিশনার মো. মোরশেদ আলম ভোরের আকাশকে বলেন, ‘ঘটনাটি একটি মসজিদের মিলাদ মাহফিলকে কেন্দ্রে ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। তুরাগ থানার ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আমার এলাকায় কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।’
আহত কৃষক লীগ নেতা রিপনের বাবা জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘চন্ডালভোগের মসজিদের মিলাদ মাহফিল হবে। তাই মসজিদ কমিটির লোকজন আমার বাড়ির পাশে এসে টাকা তুলে দেওয়ার জন্য সহযোগিতা চান। এ সময় বাসার পাশের চায়ের দোকান থেকে তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী টাকা তুলছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘তুরাগ থানা আওয়ামী লীগের অফিসের পাশের রহমানের দোকানে যাওয়ার পর স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী মুক্তার আসে। তখন সে আমায় বলে, তুই নিজেই তো ১০ হাজার টাকা দিতে পারস। তাহলে দোকানে টাকা চাস কেন? উত্তরে আমি বলি, আল্লাহর রহমতে আমি ১০ হাজার না, ২০ হাজার টাকা দিতে পারব। তুই কিছু দিলে দে।’
জয়নাল আবেদিন বলেন, ‘পরে মুক্তার ও তার ভাই ফরহাদ ওই দোকানেই আমাকে আটকে রেখে ধাক্কাধাক্কি করে। তর্ক-বিতর্কের এক পর্যায়ে এলাকার লোকজন আমাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। বাড়িতে আসার পর মুক্তার, তার ভাই ফরহাদ এবং তাদের দুই ভাগনেসহ অজ্ঞাতপরিচয় ১২-১৫ জন চাপাতি, রড ও লাঠি নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। আমার দুই ছেলে রিপন, লিটন, রিপনের বন্ধু বিল্লাল এবং ভাড়াটিয়া আলাউদ্দিনের ওপর হামলা করে।’
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, ‘তর্ক-বিতর্কের শুরুতেই মুক্তার ও তার ভাই ফরহাদকে বারবার ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পরে আবার লোকজন নিয়ে রিপনের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে।’
হামলার শিকার কৃষক লীগ নেতা রিপন হোসেন বলেন, ‘হামলাকারী মুক্তার ও ফরহাদ এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। এলাকায় মাদক ব্যবসা করার প্রতিবাদ করায় মুক্তার অজ্ঞাতপরিচয় ১৫-১৬ জন সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের বাড়িতে অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমরা দুই ভাইসহ চারজন গুরুতর আহত হই। বিল্লালের অবস্থা গুরুতর।’
তিনি বলেন, ‘হামলাকারীরা আমার মা, বোন ও বউয়ের শরীরেও আঘাত করেছে।’
ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করা তুরাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোশারফ বলেন, ‘আমি হামলাকারীদের তথ্য সংগ্রহের কাজ করছি। কাজ শেষ হলে বিস্তারিত বলতে পারব। আহতরা অভিযোগ দিলে মামলা গ্রহণ করা হবে।’
মন্তব্য