রাজধানীর ভাটারা থানাধীন বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার একটি বাসা থেকে নির্মম নির্যাতনের শিকার লিজা (১২) নামে এক গৃহকর্মীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার সারা শরীরে অবর্ণনীয় জখমের চিহ্ন রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল শনিবার বিকাল ৩টার দিকে ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে বসুন্ধরার বি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১৯৩ নম্বর বাসার দরজার তালা খুলে বাথরুম থেকে ওই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। সেখানে চিকিৎসা দিয়ে তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা মেডিকেলের ওসিসিতে।
নির্যাতনের শিকার লিজা জানিয়েছে, তুচ্ছ সব কারণে তাকে নির্যাতন করা হতো। ঘুম থেকে দেরি করে উঠলে, কাজ না পারলে এমনকি পাশের বাসার বিড়াল শব্দ করলেও গৃহকর্ত্রীর ছেলের অভিযোগেও তাকে মারধর করা হতো। রান্না করার গরম খুন্তি দিয়ে তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত ছ্যাঁকা দেওয়া হতো। মাঝেমধ্যেই রড দিয়ে পিটানো হতো। সবশেষ তিন দিন আগে তাকে বাথরুমে আটকে বাসা থেকে চলে যান গৃহকর্তা এজিস সাকলেন ও গৃহকর্ত্রী তান্নী।
লিজা আরো জানায়, এই তিন দিন বাথরুমের পানি খেয়ে বেঁচে ছিল সে। অনেক কান্নাকাটি করেও কারো সাড়া পায়নি। শনিবার দুপুরে পাশের ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়ারা তার চিৎকার শুনতে পেয়ে পুলিশে খবর দেয়।
ভাটারা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হাসান মাসুদ জানান, বিকাল ৩টার পরে ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে বসুন্ধরার ওই বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। বাসার দরজায় বাইরে থেকে তালা দেওয়া ছিল। দারোয়ানের কাছ থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে তাকে বাথরুমের ভেতর আটকানো অবস্থায় পাওয়া যায়।
তিনি জানান, গৃহকর্মীর পুরো শরীরেই যখম ও ঘা রয়েছে। তাকে ওসিসিতে ভর্তি করানো হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে।
এসআই হাসান মাসুদ জানান, লিজার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলায়। তার বাবা রতন তাদের রেখে চলে গেছেন। তার মা সেলিনা আরেকজনকে বিয়ে করেছেন। এক ভাই ও তিন বোনের মধ্যে তৃতীয় লিজা। মাস দুয়েক আগে কমলা নামে এক নারী তাকে ওই বাসার কাজে দেন। বেতন ধরা হয় সাড়ে ৩ হাজার টাকা।
মন্তব্য