আইন পেশায় যুক্ত থেকেও বেআইনি কাজ করেছেন গাফফার নামে এক অপহরণকারী। এক কলেজ শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেন তিনি।
র্যাব জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত গাফফার একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করার পর আইন পেশায় যুক্ত হন। আইন পেশায় যুক্ত থেকেও তিনি বেআইনি কাজ করেন।
অপহরণের শিকার কলেজ শিক্ষার্থীকে নিয়ে চারটি জেলা ঘুরেছেন অপহরণকারীরা। ভুক্তভোগী মেধাবী কলেজছাত্রী যখন স্কুলে পড়ত তখন থেকেই রাস্তায় ইভটিজিং ও ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়রানি করতেন অপহরণকারী আবু জার গিফারী ওরফে গাফফার।
র্যাব জানায়, শুধু ইভটিজিংয়েই থেমে থাকেননি গাফফার। পরে ভুক্তভোগী মেয়ের পরিবারকে বিয়ের জন্য বিভিন্নভাবে চাপ ও হুমকি দিতেন। মেয়ের পরিবার বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে গাফফার অপহরণ করে বিয়ে করার হুমকি দেন। গত ২ মার্চ ঝিনাইদহ আদালত চত্বরে অপহরণের পরিকল্পনা করেন তিনি।
পরে ৫ মার্চ ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার একটি রাস্তা থেকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে অপহরণ করেন।
শুধু তাই নয়, আইন-শৃংখলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতে অপহরণকারীরা ব্যবহার করে বিভিন্ন লোকাল রোড। এর পরেও র্যাবের জালে ধরা পরেন তারা।
সোমবার (৭ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে এসব জানান র্যাব সদর দপ্তরের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, অপহরণের পর মেয়েটিকে ৩০ ঘণ্টা আটকে রেখে চারটি জেলায় ঘুরিয়ে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন অপহরণকারী গাফফার। বিয়েতে অস্বীকৃতি জানালে মেয়েটিকে অ্যাসিড দিয়ে মুখ ঝলসে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়।
অপহরণের পর ভুক্তভোগীর বাবা ঝিনাইদহ সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে গাফফারের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার পর র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-৬ ও র্যাব-৪ এর যৌথ অভিযানে ৭ মার্চ মানিকগঞ্জের সদর থানা এলাকা থেকে অপহরণচক্রের মূল পরিকল্পনাকারী আবু জার গিফারী ওরফে গাফফারকে গ্রেপ্তার করে।
খন্দকার আল মঈন বলেন, অপহৃত শিক্ষার্থী অত্যন্ত মেধাবী। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। পরে এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ পায়। তিনি যশোর বোর্ডে মেধাতালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করেন। ২০১৯ সাল থেকে গাফফার মেয়েটিকে ইভটিজিং ও ভয়ভীতি দেখিয়ে হয়রানি করতেন। মেয়েটি তার যন্ত্রণায় প্রাইভেট ও স্কুলে যেতে পারত না। একসময় মেয়েটি একা বের হওয়া বন্ধ করে দেয়, সে তার বাবা ও বান্ধবীদের সঙ্গে স্কুল-প্রাইভেটে যেত।
র্যাব কমান্ডার বলেন, এ ঘটনায় দেশব্যাপী জনরোষ তৈরি হয়। মেধাবী ছাত্রীর পাশে দাঁড়ায় তার সহপাঠীরা।
মন্তব্য