মোহাম্মদ মামুন শেখ (২৮)। পেশায় জাহাজ মেরামত মিস্ত্রি। তবে এই পেশার আড়ালে মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, ডাকাতি ও কন্ট্রাক্ট কিলিংসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল বলে দাবি করেছে র্যাব।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও থানাধীন মেঘনা ঘাট এলাকা থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ধলপুর কার্যালয়ে র্যাব-১০ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
র্যাব জানিয়েছে, আয়নাবাজ সোহাগের অন্যতম সহযোগী ও কদমতলীর টিটু হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি মামুনকে মেঘনা ঘাট থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-১০। তার বিরুদ্ধে কদমতলী থানায় ২টি হত্যা মামলাসহ আরো ৪টি মামলা রয়েছে।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার এড়াতে মুন্সিগঞ্জে ৬ মাস, যশোরে ৯ মাস, মেঘনা ঘাট লাকি ডগইয়ার্ডে ৫ মাস, ধামরাইতে ৪ মাস, নবীনগরে ২ মাস, মেঘনা ঘাট মদিনা ডগইয়ার্ডে ৭ মাস করে মিথ্যা পরিচয়ে জাহাজ মিস্ত্রি হিসেবে কাজ করতেন মামুন শেখ।
২০১০ সালের ২৬ নভেম্বর পূর্ব শত্রুতার জেরে পরিকল্পিতভাবে হুমায়ুন কবির ওরফে টিটুকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন মামুন। গুলি টিটুর মাথার ডান পার্শ্বে লাগে। টিটুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
অতিরিক্ত ডিআইজি মাহফুজুর রহমান বলেন, মামুনের মা ও আয়নাবাজ সোহাগের বাবার মধ্যে ধর্মের ভাইবোনের সম্পর্ক। এই সুবাদে মামুন ও সোহাগের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। মামুন ও সোহাগ একত্রে মাদক সেবন, মাদক ব্যবসা, ছিনতাই, ডাকাতি, হত্যাসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছিলেন। এসব কর্মকান্ডে মামুন সোহাগের প্রধান সহযোগী হিসেবে কাজ করতেন।
তিনি বলেন, হুমায়ুন কবির ওরফে টিটুর স্ত্রী বাদী হয়ে কদমতলী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আসামি করা হয় মামুন (৩৩), সোহাগ ওরফে বড় সোহাগ (৩৪), সোহাগ ওরফে ছোট সোহাগসহ (৩০) অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে।
এই র্যাব কর্মকর্তা বলেন, ২০১০ সালে টিটু হত্যা মামলার ২ নম্বর আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার হন মামুন শেখ। ২০১৪ সালে জামিনে মুক্তি লাভ করেন। ২০১৭ সালের ২৮ ডিসেম্বর সেই মামলায় মামুন শেখ এর অনুপস্থিতিতে আদালত রায় দেয়। মামুন শেখ এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করে আদালত। আদালতের রায় প্রকাশের পর আত্মগোপনে চলে যায় মামুন শেখ।
২০১৫ সালে কদমতলী থানাধীন জুরাইন এলাকায় মামুন, হাবু, চান মিয়া ওরফে চানু, শুকুর, দিপু, স্বপন, রকি ও ইব্রা মিলে একত্রে ইয়াবা, হেরোইনসহ বিভিন্ন ধরণের মাদক ব্যবসা করতেন। টাকা ভাগাভাগি নিয়ে চান মিয়া ও ইব্রার সঙ্গে মামুনসহ অন্যদের বিবাদের ফলে দুটি দলে বিভক্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে মামুন ও হাবুদের মাদক ব্যবসায় চান মিয়া বাধা দিলে মামুন ও তার দল চান মিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে। চান মিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে জুরাইন বাগানবাড়ী এলাকায় ইব্রার পাশের বাড়ীতে গেলে চান মিয়াকে না পেয়ে তার ভাই ও সহযোগী ইব্রাকে গুলি করে হত্যা করে।
মন্তব্য