-->
শিরোনাম

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ নীল’ এর এমডি ও পরিচালক গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ নীল’ এর এমডি ও পরিচালক গ্রেপ্তার
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ নীল’ এর এমডি ও পরিচালক গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব

লোভনীয় অফার দিয়ে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হওয়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান 'আকাশ নীল' এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মশিউর রহমান ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান রনিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

সোমবার (২১মার্চ) কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।

র‍্যাব জানায়, বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রতিষ্ঠানকে লিমিটেড কোম্পানীতে রূপান্তরিত করে প্রতারক চক্রটি। কিন্তু এই লিমিটেড কোম্পানী ছিল পরিবারকেন্দ্রিক। পরিবারকেন্দ্রিক ব্যবসায় মশিউর রহমান ছিলেন ম্যানেজিং ডিরেক্টর, তার মা ছিলেন চেয়ারম্যান এবং তার বন্ধু ইফতেখাইরুজ্জামান রনি ছিলেন ডিরেক্টর। সেখানে নিজের নামে ৭৭ শতাংশ, বোনের নামে ১০ শতাংশ, মাতার নামে ৮ শতাংশ এবং তার স্ত্রীর নামে ৫ শতাংশ শেয়ার রেখেছিলেন।

র‍্যাব জানায়, অন্যান্য ই-কমার্স ব্যবসার মতো 'গেটওয়ে সিস্টেম' থাকলেও সরাসরি গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হতো। ই-কমার্স নীতিমালার কারণে পণ্য ডেলিভারি না হলে টাকা গেটওয়েতে আটকে থাকার কারণে সেসব টাকা গ্রাহকদের রিফান্ড করা হতো। সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে প্রদানকৃত অর্থ নিয়ে তারা প্রতারণা করত, যা নীতিমালা বর্হিভূত।

গত ১৮ মার্চ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক ভুক্তভোগী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশনীল’ এর এমডি এবং ডিরেক্টরসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

র‍্যাব জানায়, প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ৪০ জন অস্থায়ী কর্মচারী ছিল। কোম্পানীর ধানমন্ডিতে একটি ফ্ল্যাট আছে যার বর্তমান মূল্য ৩ কোটি টাকা। তারা ২টি দামী গাড়ী ব্যবহার করেন। কোম্পানীর প্রায় ৪টি টাটা পিকআপ রয়েছে। বর্তমানে গ্রাহকদের কাছে দেনা প্রায় ৩০ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্যাংকে তার ৪টি একাউন্টের তথ্য পাওয়া গেছে।

এর আগে, র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র‌্যাব-২ এবং র‌্যাব-৮ এর যৌথ অভিযানে ফরিদপুর থেকে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানটির এমডি মোঃ মশিউর রহমান ও পরিচালক ইফতেখাইরুজ্জামান রনিকে ফরিদপুর ও রাজধানী ঢাকা হতে গ্রেপ্তার করে। উদ্ধার করা হয় ২টি মোবাইল ফোন, ২টি ল্যাপটপ এবং ১টি প্রাইভেটকার।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, তারা প্রথমে শাকসবজি হোম ডেলিভেরি দিত। এরপর কৌশল পাল্টে ইভ্যালিসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর মতো মোটর সাইকেলের অফার দিয়ে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে স্বল্প মূল্যে বা ডিসকাউন্টে প্রতিটি মোটর সাইকেলে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য ছাড় দিয়ে থাকেন। এইভাবে গ্রাহকের কাছ থেকে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেয়।

কোম্পানীর গ্রাহক প্রসঙ্গে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার গ্রাহক ছিল। সর্বশেষ যে মোটরসাইকেলের অফারটি দিয়েছিল সেখানে ছাত্র বা যুব সমাজের গ্রাহকরাই মোটরসাইকেলের অফারটি গ্রহণ করেছিল। বিক্রি বাড়াতে গ্রাহকদের প্রতিনিয়ত চাহিদা তৈরী হয় এ ধরণের পণ্যকে বেছে নেয়, যেমন- মোবাইল, টিভি, ফ্রিজ, মোটরবাইক, গাড়ী ইত্যাদি।

গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

মন্তব্য

Beta version