আনসার কর্মকর্তা নাসির হত্যা: দুইজনের ১০ বছর কারাদণ্ড

আনসার কর্মকর্তা নাসির হত্যা: দুইজনের ১০ বছর কারাদণ্ড
দন্ডিত আরব আলী হাওলাদার ওরফে ডাকাত আলী- (রায়ের পর)

১৪ বছর আগে রাজধানীর উত্তরখান থানার মাউসাইদ পূর্বপাড়ার সহকারী আনসার অ্যাডজুটেন্ট মো. নাছির উল্লাহ খান হত্যা মামলায় দুই আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। এছাড়া অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় ১০ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (২৩ মার্চ) ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল নং-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ রায় দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন-আরব আলী হাওলাদার ওরফে ডাকাত আলী ও রহমান খা। এছাড়া এই দুই আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামির মধ্যে রহমান খা পলাতক থাকায় তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন বিচারক।

বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর আবু আব্দুল্লাহ ভূঞা ভোরের আকাশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

রাষ্ট্রপক্ষের এ আইনজীবী জানান, দুই আসামিকে দন্ডবিধির- ৩৯৬ ধারায় দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো ছয় মাসের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। এছাড়াও দন্ডবিধির ৪১২ ধারায় দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে ছয় মাস সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে। তবে রায়ে বিচারক আবু জাফর মোঃ কামরুজ্জামান পৃথক দুটি ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে। ফলে আসামিদের দশ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মো. সালাম, নুরুল ইসলাম তালুকদার ওরফে নুরা তালুকদার ওরফে গরুচোর নুরা, গোলাম মোস্তফা ওরফে গোলাম মোস্তফা খা, রেজাউল ব্যাপারী ওরফে রেজু ব্যাপারী, লিটন হাওলাদার, মো. জালাল খা, মিজান মোল্লা, সহি সরদার, ইয়ামিন ব্যাপারী, ফজলুল করিম সরকার। এছাড়া বিচার চলাকালে দুই আসামি রেজাউল করিম হাওলাদার ও শেখ আবু মারা যাওয়ায় তাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৮ সালের ৭ সেপ্টেম্বর দিনগত রাত আড়াইটার দিকে উত্তরখান থানার মাউসাইদ পূর্বপাড়ার সহকারী আনসার অ্যাডজুটেন্ট মো. নাছির উল্লাহ খানের বাড়ি ঘেরাও করে দুর্ধর্ষ ডাকাতদল। তারা বাইরে থেকে জানালা দিয়ে মো. নাছির উল্লাহ খানকে গুলি করে গুরুতর আহত করে এবং ঘরের কেচিগেটের তালা ও মূল দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে।

এরপর নাছির উল্লাহ খানের চিৎকারে স্ত্রী আবেদা সুলতানা ও মেয়ে নুসরাত জাহান বৃষ্টি ঘরে আসেন। তখন ডাকাতরা তাদেরও মারধর করে এবং ভয়ভীতি দেখায়। ডাকাতরা আহত নাছির উল্লাহ খানকে পুনরায় ড্রয়িং রুমে গুলি করে ও ঘরের আলমারি ভেঙে নগদ ৪০ হাজার টাকা, দুটি মোবাইল সেট ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় দুই লাখ ৭১ হাজার টাকার মালামাল নিয়ে যায়।

গুরুতর আহত নাছির উল্লাহ খানকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় নিহত নাছির উল্লাহ খানের ছোট ভাই মো. শামসুদ্দিন খান বাদী হয়ে উত্তর খান থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তদন্তকালে আসামি শেখ আবুকে গ্রেপ্তার করে এবং তার কাছ থেকে ডাকাতির মালামাল মোবাইল সেট উদ্ধার করে। মামলার তদন্তকালে আসামি রেজাউল করিম, মো. সালাম, শেখ আবু, রহমান খা ও আসামি আরব আলী হাওলাদার আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

মন্তব্য