মাত্র দেড় মিনিটের কিলিং মিশনে খুন হন আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু। এ সময় খুনিদের ফাঁকা গুলিতে প্রাণ যায় রিকশা আরোহী কলেজছাত্রী সামিয়া আফনান জামাল প্রীতির। তদন্তসংশ্লিষ্টরা বলছেন, হত্যাকাণ্ডটি পূর্বপরিকল্পিত। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয় দুই পেশাদার খুনি। এর মধ্যে একজন মোটরসাইকেলচালক। অন্যজন সরাসরি গুলি চালায়। এ দুজনকে ধরলেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একাধিক সংস্থার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তারা দাবি করছেন, কিলিং মিশনে অংশ নেওয়া দুজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
স্থানীয় একাধিক সূত্র হত্যাকাণ্ডের পেছনে ক্রীড়া ভবনে টেন্ডারবাজি ও সাবেক যুবলীগ নেতা মিল্কি হত্যাকাণ্ডের যোগসূত্র রয়েছে বলে দাবি করেছে। মিল্কি হত্যাকাণ্ডের পর তার ঘনিষ্ঠ সহযোগেী শাহরিয়ার সোহেল ওরফে শুটার সোহেল দেশ ছেড়ে কানাডা পালিয়ে যায়। সম্প্রতি দেশে এসেছে সোহেল। তাই কেউ কেউ বলছেন, এ হত্যাকাণ্ডের পেছনে সোহেলের হাত রয়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় ক্রীড়া ভবনের একক নিয়ন্ত্রণ ছিল জাহিদুল ইসলাম টিপুর। সর্বশেষ একটি টেন্ডারের ৩৮টি কাজ নেয় তার প্রতিপক্ষ গ্রুপ। এ নিয়ে কয়েকদিন ধরে সেখানে উত্তেজনা চলছিল বলে গোয়েন্দা সূত্র জানায়।
হত্যাকাণ্ডের পেছনে এ বিষয়টিও আমলে নিচ্ছেন তদন্তসংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে নিহত টিপুর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন দাবি করেছেন, স্থানীয় এক কাউন্সিলরের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল টিপুর। হত্যাকাণ্ডে ওই কাউন্সিলরেরও হাত থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় টিপু মাইক্রোবাসে করে শাহজাহানপুর আমতলা কাঁচাবাজার হয়ে বাসায় ফিরছিলেন। শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে পৌঁছালে হেলমেট পরা এক দুর্বৃত্ত তাকে লক্ষ করে গুলি করে।
পুলিশের মতিঝিল বিভাগের সবুজবাগ জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) মনতোষ বিশ্বাস বলেন, এ ঘটনায় নিহত টিপুর স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে মামলা করেছেন। অভিযোগে তিনি কারো নাম উল্লেখ করেননি। অজ্ঞাত আসামি হিসেবে অভিযোগ করেছেন। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। তবে সিআইডির ক্রাইমসিন ইউনিটসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করেছেন। এছাড়া আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আ. আহাদ বলেন, মামলাটি আমরা তদন্ত করছি। এ ঘটনায় রিকশা আরোহী সামিয়া আফরান জামাল প্রীতি নামে ২২ বছরের এক তরুণীও নিহত হয়েছেন। তার পরিবারে এখনো থানায় আসেনি। টিপুর স্ত্রীর করা মামলায় প্রীতিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা, সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা খুনিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি। তিনি আরো বলেন, চার-পাঁচ দিন আগে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা টিপুকে একটি নম্বর থেকে ফোন করে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। কিন্তু টিপু কিংবা তার স্ত্রী ডলি পুলিশকে হুমকির বিষয়টি তখন জানাননি। তবে ওই নম্বরের সূত্র ধরে আমরা তদন্ত করে যাচ্ছি।
পুলিশ জানায়, ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই রাতে গুলশানে শপার্স ওয়ার্ল্ড নামের একটি বিপণিবিতানের সামনে ঢাকা মহানগর যুবলীগ দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক মিল্কিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় মিল্কির ছোট ভাই রাশেদুল হক খান বাদী হয়ে গুলশান থানায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরো ৪-৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলার আসামি ছিলেন মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু। পরে তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা পায়নি পুলিশ। তখন তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে শাহজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ঠাকুর দাশ বলেন, খুব অল্পসময়ে কিলিং মিশনটি শেষ করে দুর্বৃত্তরা। তারা কিলিং মিশন শেষ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। হামলাকারীরা ১২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে কিলিং মিশনে।
তদন্তসংশ্লিষ্টরা জানান, টিপুকে শাহজাহানপুরে ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শোরুমের ঠিক সামনে থেকে গুলি করা হলেও আগে থেকে তাকে নজরদারি করছিল আরো কয়েকজন। প্রাথমিকভাবে স্পষ্ট, এটি পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটির নম্বরপ্লেট ও মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেওয়া নম্বরের সূত্র ধরে এখন তদন্ত চলছে। এছাড়া ঘটনায় বেশকিছু ফুটপ্রিন্ট, আলামত ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করা হচ্ছে। এদিকে টিপু হত্যাকাণ্ডের একটি সিসিটিভি ফুটেজ আমাদের হাতে এসেছে। ঘটনাস্থলের পাশের একটি বহুতল ভবনে বসানো সিসিটিভি থেকে ফুটেজটি নেওয়া। ফুটেজে টিপু হত্যা মিশনের স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায়।
ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ঠিক ১০টা ২১ মিনিট ২০ সেকেন্ড। আওয়ামী লীগ নেতা টিপুর ব্যক্তিগত সাদা রঙের নোয়াহ মাইক্রোবাসটি যানজটে আটকাপড়ে শাহজাহানপুর ইসলামী ব্যাংকের পাশে বাটার শোরুমের ঠিক সামনে। এটি খিলগাঁও রেলগেট অভিমুখে যাওয়ার রাস্তা। এর ১০ সেকেন্ড আগে বিপরীত দিকের রাস্তা ধরে উল্টোপথে একটি মোটরসাইকেল আসে। মোটরসাইকেলটি শাহজাহানপুর রেলওয়ে হাফেজিয়া সুন্নীয়া আলিম মাদ্রাসা ও এতিমখানার সামনে এসে ঘুরিয়ে আবার রাজারবাগ অভিমুখে দাঁড় করায় চালক। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের পেছনে থাকা অস্ত্রধারী সড়ক বিভাজক পার হয়ে রাস্তার মাঝখানে অবস্থান নেয়। এ সময় রাস্তায় খুব ধীরগতিতে গাড়ি চলছিল। ১০টা ২১ মিনিট ৫০ সেকেন্ডে টিপুর গাড়ির বাম দিক দিয়ে একেবারে কাছে গিয়ে প্রথম গুলি ছোড়া হয়। আচমকা আক্রমণ দেখে টিপুর গাড়ির গতি বাড়িয়ে দেন চালক মুন্না।
তবে সামনেই রিকশার জট থাকায় গাড়িটি বেশি দূর এগোতে পারেনি। গাড়ি থেকে কিছুটা পিছিয়ে পড়ায় হামলাকারী দৌড়ে সামনে এসে খুব কাছ থেকে গাড়ির সামনের আসনে বসে থাকা টিপুকে লক্ষ করে পরপর কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ওই সময় গাড়ির জানালার কাচ ভেদ করে গুলিবিদ্ধ হন টিপু। এ সময় আশপাশের লোকজন আতঙ্কে ছোটাছুটি করতে থাকেন। ১০ সেকেন্ড টিপুকে লক্ষ করে গুলি ছোড়েন। এরপর আশপাশে এলোপাতাড়ি কয়েকটি গুলি ছুড়তে দেখা যায়। পরে টিপুর গাড়ির সামনে দিয়ে আবার সড়ক বিভাজক পার হয়ে রাস্তার উল্টোপাশে মাদ্রাসার সামনে দাঁড়ানো মোটরসাইকেলের দিকে চলে যায় হত্যাকারী। রাত ১০টা ২২ মিনিট ১০ সেকেন্ডে দেখা যায়, মাইক্রোবাসের পেছনের আসনে বসে থাকা দুজন গেট খুলে বাইরে এসে মোটরসাইকেলটিকে ধাওয়া দিলে হত্যাকারীরা পালিয়ে যায়। এরপর মাইক্রোবাসটি ঘিরে ধীরে ধীরে লোকজন জড়ো হতে থাকেন।
টিপুকে ৪-৫ দিন আগে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছিল তার স্ত্রী মামলার এজাহারে বলেছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন কিনাÑ প্রশ্ন করা হলে মিজান বলেন, টিপুর সঙ্গে আমার কোনো রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। আমি তার বন্ধু, মাঝেমধ্যে আড্ডা দিতাম একসঙ্গে। এ ধরনের কোনো কথা সে আমাকে বলেনি। কোনো সময়ই সে আমার সঙ্গে এ ধরনের কোনো কথা বলেনি। মিল্কি হত্যার সঙ্গে তার নাম জড়িত ছিল এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন কিনাÑ প্রশ্ন করা হলে বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছু জানি না। প্রশাসন বিষয়টা দেখছে, তারা বলতে পারবে।
এদিকে এ ঘটনায় টিপুর স্ত্রী ফারজানা ইসলাম ডলি বাদী হয়ে শাহজাহানপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন। এজাহারে নিহতের স্ত্রী উল্লেখ করেন, আমার স্বামী মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। আমার বাবার মতিঝিল কাঁচাবাজার এলাকায় একটি রেস্টুরেন্টে আছে। আমার স্বামী রেস্টুরেন্ট দেখাশোনা করতেন। আমার স্বামী বৃহত্তর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের ১০ বছর সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি সাধারণ সম্পাদক থাকাকালীন দলীয়ভাবে কোন্দল ছিল। গত ৪-৫ দিন আগে আমার স্বামীকে অজ্ঞাতনামা দুষ্কৃতকারীরা মোবাইল ফোনে হত্যার হুমকি দেয়।অন্যদিকে নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্টে এসআই ঠাকুর দাশ মালো উল্লেখ করেন, নিহত টিপুর গলার পাশে একটি গোলাকার ছিদ্র চিহ্ন আছে, বুকের বাম পাশে একটি ছিদ্র চিহ্ন, নাভীর ওপরে পেটের মধ্যভাগে একটি, বাম বোগলের কাছে একটি, বাম কাধের ওপড়ে দুটি, পিঠের বাম পাশে একটি, পিঠের ডান পাশের কোমরে চারটি, ডান নিতম্বে তিনটি গোলাকার ছিদ্র চিহ্ন রয়েছে।
গত শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে প্রীতির বাবা জামাল উদ্দিন জানান, রাজধানীর ২১৮ নম্বর পশ্চিম শান্তিবাগের বাসায় পরিবার নিয়ে থাকেন তিনি। প্রীতির মা হোসনে আরা বেগম গৃহিণী। গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কড়ইবাড়ী গ্রামে। ময়নাতদন্তের পর মৃতদেহ শান্তিবাগ মসজিদে জানাজা শেষে শাহজাহানপুর কবরস্থানে মেয়েকে দাফন করা হবে। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি গরিব মানুষ। আমি মামলা করে কী করব। মামলা আমরা চাই না। আমরা নিরীহ মানুষ। গরিবের তো বিচার নেই। আমার মেয়ে তো আর ফিরে আসবে না। এর বিচার আল্লাহর কাছে দিয়ে রাখলাম।
জামাল উদ্দিন বলেন, প্রীতি বৃহস্পতিবার সারা দিন ওর বান্ধবী সুমাইয়ার বাসায় ছিল। রাতে ওর বান্ধবীসহ আবার শান্তিবাগের বাসায় ফিরছিল। তখন ওর মা বলে, বাসায় তোমার মামা-মামি আসছে, তুমি আজ সুমাইয়ার বাসায় থাক। পরে ওরা দুজন বাগিচায় সুমাইয়ার বাসায় ফিরে যাওয়ার সময় এ ঘটনা ঘটে। তিনি বলেন, বদরুন্নেছা কলেজ থেকে গত বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছিল প্রীতি। তবে অকৃতকার্য হয় সে। ১ এপ্রিল প্রীতির একটা চাকরিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই প্রীতি দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল।
নিহত টিপুর স্ত্রী ফারহানা বলেন, আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তার মৃত্যু নিশ্চিত করে সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। তাকে হত্যা করার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছিল তারা। আজ তারা সফল হয়েছে। তিনি পুলিশ প্রশাসনের কাছে অনেকবার নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেন। কিন্তু প্রশাসনের লোকজন কোনো সাড়া দেননি। তারা যদি সাড়া দিতে আজ তাকে হত্যা করতে পারতে না।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যার ঘটনা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে র্যাব। ইতোমধ্যে ঘটনার বেশকিছু আলামত ও তথ্য পেয়েছে সংস্থাটি। গত রাতের ঘটনায় হত্যাকারীকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতের গুলিতে নিহতের ঘটনায় আমরা বেশকিছু পায়ের ছাপ ও সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। বেশকিছু মোটিভও আমরা হাতে পেয়েছি। সেগুলো আমরা পর্যালোচনা করছি। ঘটনায় শুটারদের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে শনাক্তের চেষ্টা করছি।
আল মঈন আরো বলেন, র্যাব ছাড়াও সিআইডি, থানা পুলিশ ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার একাধিক টিম কাজ করছে। আমি মনে করি, খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনার মোটিভ উন্মোচন ও শুটারদের শনাক্ত করে আইনের হাতে সোপর্দ করা সম্ভব হবে। ঢাকা মহানগর ডিবি পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হলেই হত্যাকাণ্ডের রহস্য বেরিয়ে আসবে।
মন্তব্য