-->

অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করল কারা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করল কারা!
সংঘর্ষের সময় হামরার শিকার হন একজন ফটো সাংবাদিক। নীলক্ষেতের কাছাকাছি এলাকায় ওই হামলায় দোকানকর্মীরা অবস্থান নিয়েছিলেন।

রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় দোকান মালিকদের সঙ্গে ছাত্রদের দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ ঘটে। এ সংঘর্ষের মধ্যেই দুপুরে ওই সড়কে রেহাই পায়নি অ্যাম্বুলেন্স, হামলার শিকার হয়েছেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক।

এদিকে, ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া সাংবাদিকদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে উভয়পক্ষে থাকা দুর্বৃত্তরা। এসময় সাংবাদিকরাই যেন হয়ে যান উভয়পক্ষের ‘অঘোষিত শত্রু’। তবে ছাত্রদের চেয়ে দোকানদাররাই সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয়েছেন বেশি।

ঘটনাস্থল থেকে ভোরের আকাশের মাল্টিমিডিয়া টিমের সংবাদকর্মী জিহাদ জানান, পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের নির্মম আক্রোশের শিকার হয়েছেন বেশ কিছু সাংবাদিক। এরমধ্যে

অন্তত পাঁচজন সাংবাদিককে নির্মমভাবে মারধর করা হয়। এদের একজন এসএ টিভির সাংবাদিক।

নিউমার্কেট এলাকায় দোকানদার-ছাত্রদের সংঘর্ষের সময় অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর

 

জিহাদ আরো বলেন, সেখানে তাদের ক্যামেরা পারসনকে মারধর করার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে তোলা ছবি মুছে ফেলতে বাধ্য করা হয়েছে। এসময় তাদের সামনেই কয়েকজন ফটো সাংবাদিকের ক্যামেরা আছাড় মেরে ভেঙে ফেলা হয়। এছাড়াও বেশ কিছু ক্যামেরা পারসনকে মারধর করতে উদ্যত হয়ে তাদের ক্যামেরার মেমোরি কার্ড ছিনিয়ে নেওয়া হয়। সাংবাদিক পরিচয়ে কেউ তথ্য চাইলে তাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়াও ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করেন এমন কিছু ইউটিউবার এবং অনলাইন সাংবাদিকদের ফোন ছুড়ে ফেলে ভেঙে দিতে দেখা গেছে তাদের।

অন্যদিকে, ছাত্রদের মধ্যেও অনেকে সাংবাদিকদের মারধর করার হুমকি দিয়ে ক্যামেরা থেকে মেমোরি কার্ড খুলে নেয়। তবে এদের সংখ্যা ছিল কম। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের পাশ থেকে নির্বিঘ্নে সংবাদ প্রচার করেছে গণমাধ্যমকর্মীরা।

দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে মার্কেটের ওপর থেকে ব্যবসায়ীরা এবং ঢাকা কলেজের হল ও ভবনগুলোর ছাদ থেকে ছাত্ররা পরস্পরকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছোড়ে। এসব ইটের আঘাতে সারাদিনে অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হন। এদের বেশিরভাগই ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের কেউ দোকানদার, কেউ শিক্ষার্থী, কেউ কেউ পথচারী যারা ঘটনা দেখতে দীর্ঘক্ষণ ওই এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এসময় কারো ছোড়া ঢিল এসে তাদের মাথায় পড়ে।

তবে সংঘর্ষের সময় একটি অ্যাম্বুলেন্স ওই পথ ব্যবহার করে সংকটাপন্ন রোগীকে দ্রুত ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করলে চরম ভোগান্তি ও দুর্ব্যবহারের শিকার হন সঙ্গে থাকা রোগীর সঙ্গী ও চালক।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্ররা অ্যাম্বুলেন্স দেখে ছেড়ে দিলেও কিছুদূর সামনে গিয়ে দোকানদারদের বাধার মুখে পড়েন অ্যাম্বুলেন্স চালক। এ সময় অ্যাম্বুলেন্সচালক ও রোগীদের অনুরোধ সত্ত্বেও দোকানদাররা অ্যাম্বুলেন্সটি ভাঙচুর করেন। এ ঘটনার ছবি তোলা হলে কয়েকজন সাংবাদিককেও মারধর করে দুর্বৃত্তরা।

পরে রোগীর সঙ্গীদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাম্বুলেন্সটি ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, এসময় কাছাকাছি পুলিশ থাকলেও তারা দ্রুত হস্তক্ষেপ করেননি।

তবে দোকানদারদের পক্ষে দাবি করা হয়, গাড়িতে ঢাকা কলেজের একজন ছাত্র ছিল যে ঘটনার সময় আহত হয়। সে কারণে অ্যাম্বুলেন্সটি ওই পথে যেতে দেওয়া হয়নি। তবে দাবিকারী ব্যক্তি নাম প্রকাশ করেননি।

আরো পড়ুন:

বিকেলের মধ্যে হল ছাড়তে হবে ঢাকা কলেজের ছাত্রদের

গণমাধ্যমকর্মীদের হামলার শিকার হওয়ার চেয়ে লজ্জার কিছু নেই: জিএম কাদের

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আশা ‘অল্প সময়ে কুল ডাউন হবে’, ডিএমপি কমিশনার বললেন ‘পরিস্থিতি জটিল’

নিউমার্কেটে সংঘর্ষ: ব্যবসায়ী ও ছাত্রদের হামলায় ৩ সংবাদকর্মী আহত

 

 

মন্তব্য

Beta version