-->

অপহরণকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক
অপহরণকারী চক্রের ৫ সদস্য গ্রেপ্তার
অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ

অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের সোশ্যাল মিডিয়া ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন টিম।

মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।

ডিবি জানিয়েছে, বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দেশীয় অস্ত্র ও লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারসহ সোমবার (১৮ এপ্রিল ) রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ও নরসিংদী জেলার শিবপুর থানা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-মো. আব্দুল বারেক ওরফে রানা (৫৫), মো. হিরু মোল্লা (৪০), মো. নিজাম উদ্দিন (৪৫), মো. জাকির হোসেন (৪৮) ও মো. নজরুল ইসলাম (৪২)। এ সময় তাদের কাছ থেকে ২টি খেলনা পিস্তল, ২টি ছুরি, ১টি চাপাতি, ১টি লোহার পাইপ, ৫টি মোবাইল ফোন, ভিকটিমের ১টি মোবাইল ফোন ও ১টি প্লাস জব্দ করা হয়।

ডিবির কর্মকর্তা জানান, ভিকটিম মো. রুস্তম খান গত বছরের ২৫ জানুয়ারি তার কর্মস্থলে যাওয়ার সময় সকাল আনুমানিক ৮টা ২০মিনিটে যাত্রাবাড়ী থানাধীন বাদশা মিয়া রোডের মাথায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থানকালে হঠাৎ একটি প্রাইভেটকার তার সামনে এসে দাঁড়ায়। প্রাইভেটকারটি হতে অজ্ঞাতনামা দুজন লোক নেমে রুস্তমকে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে প্রাইভেটকারে উঠিয়ে হাত-পা বেঁধে চোখে কালো চশমা পরিয়ে দেয়। তারা রুস্তমকে পিটিয়ে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করার চেষ্টা করে তার মেয়েকে ফোন করতে বলে। রুস্তমের স্ত্রী প্রথমে তাদের বিকাশ নম্বরে ৫০ হাজার টাকা পাঠান। পরবর্তীতে তারা রুস্তমকে আরো টাকা দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করলে রুস্তমের স্ত্রী আসামিদের বিকাশ নম্বরে আরো ৫০ হাজার টাকা পাঠান। গ্রেপ্তারকৃতরা রুস্তমের কাছ থেকে সর্বমোট ১ লাখ টাকাসহ তার ব্যবহৃত ২টি মোবাইল ফোন এবং পকেটে থাকা ১ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয়। গত ২৫ জানুয়ারিতে (২০২১ সাল) বিকেল ৪ টার সময় মুন্সিগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানাধীন বাউশিয়ার একটি নির্জন স্থানে রুস্তমকে ফেলে চলে যায়। এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভিকটিম রুস্তম যাত্রাবাড়ী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে এবং ঈদের পূর্বে তারা এ ধরনের আরো কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিল বলে জানায়।

জিজ্ঞাসাবাদ ও সিডিএমএস পর্যালোচনা এবং তদন্তে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃতরা গত কয়েক বছর ধরে এ ধরণের অপরাধ করে আসছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে অপহরণ/মুক্তিপণ, চুরি, ডাকাতি, দস্যুতা, অস্ত্র, বিস্ফোরক, মারামারিসহ বিভিন্ন মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত মো. আব্দুল বারেক ওরফে রানা, মো. হিরু মোল্লা, মো. নিজাম উদ্দিন, মো. জাকির হোসেন সরাসরি অপরাধ সংঘটনের সঙ্গে জড়িত ছিল। মো. নজরুল ইসলাম লুন্ঠিত মালামাল নিজ হেফাজতে রেখে বিক্রয় করে।

অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা অপরাধ সংঘটনের পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক ঢাকা মহানগরীসহ আশপাশের এলাকায় জনসমাগম স্থলে অবস্থান নিয়ে সকালে অফিসগামী যাত্রীদের গতিবিধি লক্ষ্য করতে থাকে। যেসব যাত্রী গন্তব্যস্থলে যাওয়ার জন্য পরিবহনে উঠতে ব্যর্থ হয় তাদেরকে ডেকে গাড়িতে উঠায়।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা তাদের প্রাইভেটকারে যাত্রীবেশে ড্রাইভারসহ ৩/৪ জন অবস্থান করে এবং গাড়ির ১/২ টি সিট খালি রেখে যাত্রীদের গন্তব্য রুটের দিকে ডাকতে থাকে। যে সকল যাত্রী ফাঁদে পড়ে সরল বিশ্বাসে গাড়িতে উঠে তাদেরকে সুবিধাজনক নির্জনস্থানে নিয়ে খুন-জখমের ভয়ভীতি দেখিয়ে মুক্তিপণ আদায় করে থাকে। এছাড়াও তারা বিভিন্ন মহাসড়ক/রাস্তা হতে নগদ টাকা বহনকারী ব্যক্তিদের জোরপূর্বক গাড়িতে উঠিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সর্বস্ব লুটে নেয়।

মন্তব্য

Beta version