-->
শিরোনাম

তেঁতুলতলা মাঠ থেকে থানা সরাতে বলেছেন মেয়র, বিকল্পস্থান চান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
তেঁতুলতলা মাঠ থেকে থানা সরাতে বলেছেন মেয়র, বিকল্পস্থান চান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
তেঁতুলতলা মাঠে চলছে পুলিশ প্রহরায় থানা নির্মাণের কাজ

রাজধানীর কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠের খেলার জায়গা দখল করে থানা ভবন নির্মাণচেষ্টার প্রতিবাদ চলছেই। এ জায়গাটিতে থানা ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় এক মা ও তার ছেলেকে থানায় ১৩ ঘণ্টার বেশি আটকে রাখার প্রতিবাদে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেছে অনেকগুলো মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন। তাদের ছাড়া হলেও এ বিষয়ে প্রশাসন ক্ষমা চাইবে কিনা সে প্রশ্নটি তোলা হয়েছে এসব সংগঠনের পক্ষ থেকে। তবে পুলিশ এখনও ওই মাঠে থানা ভবন নির্মাণ কাজ অব্যাহত রেখেছে। এদিকে, ওই মাঠে স্থাপনা না নির্মাণের জন্য পুলিশ প্রশাসনকে অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র। এর জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মেয়রকেই বিকল্পস্থান খুঁজে দেওয়ার কথা বলেছেন।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁও সরকারি বিজ্ঞান কলেজে একটি অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, তেঁতুলতলা মাঠে থানা হবে কিনা এ বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এদিকে খেলার মাঠে থানা ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে তুলে নিয়ে থানায় আটকে রাখার ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়েছে বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন।

সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কোনো আইনসিদ্ধ অভিযোগ ছাড়া এভাবে ১৩ ঘণ্টার বেশি কাউকে আটকে রাখা দেশের সংবিধান ও আইনের লঙ্ঘন। এ ঘটনার তীব্র নিন্দাও জানান তারা।

আজ বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে তেঁতুলতলা গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ প্রহরায় মাঠে চলছে থানা নির্মাণের কাজ। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণমাধ্যমে মাঠ করার বিষয়ে আলোচনার কথা বললেও নির্মাণকাজ বন্ধ করেনি থানা কর্তৃপক্ষ। সকাল থেকেই বিপুল সংখ্যক পুলিশ মাঠের ভেতর ও বাইরে অবস্থান করে। পুলিশি নিরাপত্তা বেষ্টনীতে শ্রমিকরা দ্রুতগতিতে নির্মাণকাজ চালান। কয়েকজন শ্রমিক সীমানা দেয়ালের খুঁটি নির্মাণের কাজ করছেন। কয়েকজন শ্রমিক আবার নির্মাণকাজের জন্য লোহার রড সোজা করার কাজ করছিলেন।

এ সময় মাঠের ভেতর ও বাইরে কলাবাগান থানা-পুলিশের তিনটি গাড়ি দেখা গেছে। একটি গাড়ি ছিল মাঠের ভেতরে। অন্য দুটি মাঠের বাইরে, উত্তর ও পশ্চিম পাশে। মাঠের ভেতর ও বাইরে প্রায় ৩০ জন পুলিশ সদস্য অবস্থান করছিলেন। এর মধ্যে নারী পুলিশ সদস্য সাতজন। মাঠের ভেতর থাকা পুলিশ সদস্যরা চেয়ারে বসেছিলেন। কেউ কেউ ব্যস্ত ছিলেন মুঠোফোনে। মাঠের বাইরে সড়কে দাঁড় করিয়ে রাখা দুটি গাড়িতে সাত পুলিশ সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক ও উপপরিদর্শক পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে মাঠের পশ্চিম অংশে (ওয়াসার গভীর নলকূপের পাশে) পুলিশের পোশাক ছাড়া কয়েকজন ব্যক্তিকে বসে কথা বলতে দেখা গেছে। স্থানীয় কয়েকজন শিশু-কিশোর খেলার সুযোগ না পেয়ে মাঠের বাইরে দাঁড়িয়ে নির্মাণকাজ দেখছিল।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে শ্রমিকেরা কাজে আসেন। এর কিছুক্ষণ পরই সেখানে পুলিশ সদস্যরা পৌঁছান। সকাল সাড়ে ৯টার পর পুলিশের সংখ্যা আরো বাড়ানো হয় বলেও জানান ওই বাসিন্দা।

মাঠে পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতির বিষয়ে এক পুলিশ সদস্যের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

  • নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের
  • মাঠে ঈদের নামাজ আদায়ের ঘোষণা এলাকাবাসীর
  • অল্প বয়সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার শিকার হলাম: পিয়াংসু

এদিকে তেঁতুলতলা মাঠ ফিরে পেতে সেখানে ঈদুল ফিতরের নামাজ আদায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এলাকাবাসী। মাঠটিতে কলাবাগান থানা ভবনের নির্মাণকাজ চলার মাঝেই এমন সিদ্ধান্তের কথা জানালেন তারা। সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে তেঁতুলতলা মাঠে নাগরিক প্রতিবাদ সমাবেশে এ ঘোষণা দেন এলাকার স্থপতি ইকবাল হাবীব।

তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, খুব শিগগিরই এখান থেকে থানার ভবনের নির্মাণকাজ স্থানান্তর করা হবে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এই আশ্বাসের পরও যদি কেউ ঈদুল ফিতরের নামাজ বন্ধে মাঠে কোনো সীমানা দেয়াল নির্মাণ করতে চায় তবে এলাকার সবাই প্রতিরোধ গড়ে তুলবে।

তেঁতুলতলা মাঠে থানা নির্মাণ ও এলাকাবাসীকে আটকে রাখার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন। 

 

পান্থপথের উল্টো দিকের গলির পাশের খোলা জায়গাটিই তেঁতুলতলা মাঠ হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় শিশুরা সেখানে খেলাধুলা করে। পাশাপাশি মাঠটিতে ঈদের নামাজ, জানাজাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান হয়। এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি কলাবাগানের তেঁতুলতলা মাঠে খেলতে যাওয়া কয়েকটি শিশুর কান ধরে ওঠবস করায় পুলিশ। এর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।

রোববার বেলা ১১টার দিকে এই মাঠে থানা ভবন নির্মাণের প্রতিবাদ করায় এবং নির্মাণকাজের ভিডিও ধারণ করায় স্থানীয় বাসিন্দা সৈয়দা রত্নাকে আটক করে পুলিশ। পরে তার ছেলেকেও ধরে নেওয়া হয়। দুজনকে রাখা হয় কলাবাগান থানায়।

সৈয়দা রত্না উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গে জড়িত। রোববারই তাদের এই আটক নিয়ে দিনভর ব্যাপক সমালোচনা হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ গণমাধ্যমে সমালোচনার ঝড় ওঠে। তাদের আটকের খবর পেয়ে বেলা ২টার দিকে ওই মাঠে যান মানবাধিকার কর্মী খুশী কবির, বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, উদীচীর ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আরিফ নূরসহ কয়েকজন। পরে বিক্ষোভের মুখে দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল সোমবারও রাজধানীতে নাগরিক সমাজের একাধিক কর্মসূচি ছিল।

গতকাল সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনী মিলনায়তনে তেঁতুলতলা মাঠে থানা নির্মাণ ইস্যুতে ‘এলাকাবাসীকে হয়রানি ও আটকের তীব্র প্রতিবাদে’ সংবাদ সম্মেলন করে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেওয়া সংগঠনগুলো হলো এএলআরডি, বাপা, বেলা, আসক, ব্লাস্ট, গ্রিন, আমরা করি, নাগরিক উদ্যোগ, নারীপক্ষ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পগোষ্ঠী, হিউম্যান রাইটস সোসাইটিসহ অন্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক স্থপতি ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, রোববার দিনভর প্রতিবাদের মুখে মাঝরাতে থানা কর্তৃপক্ষ সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে ছেড়ে দিলেও মাঠ রক্ষায় তিনি আর আন্দোলন করবেন না বলে বেআইনিভাবে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলতে চাই, কলাবাগান থানা কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সৈয়দা রত্না ও তার নাবালক পুত্রকে কোনোরকম আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে, কোনো আইনসিদ্ধ অভিযোগ ছাড়াই দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টার বেশি আটক রাখা দেশের সংবিধান এবং আইনের ন্যক্কারজনক লঙ্ঘন ও বেআইনি। তাদের তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে রোববার সারা দিন বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও কলাবাগান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে কেন যোগাযোগ করা যায়নি, তা স্পষ্ট ব্যাখ্যার দাবি রাখে।

কলাবাগান থানা পুলিশের এ কাজকে ‘নাগরিকদের জন্য বাক স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, গণতান্ত্রিক চর্চার অধিকার এবং মানবাধিকারের বিরুদ্ধে’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এমন অবৈধ আটক ও মুচলেকা গ্রহণের আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং এজন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির নির্বাহী প্রধান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আমরা কেউই নিরাপদ বোধ করি না। এটা একটা অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে... পকেটের মধ্যে ইয়াবা ঢুকিয়ে দেওয়া, যখন-তখন তুলে নিয়ে যাওয়া। এসব কাজ যে চালু আছে- এই ঘটনাকে তার একটা উদাহরণ হিসেবে ধরে আমরা আবার সোচ্চার হলাম।

তিনি আরো বলেন, এ দেশে দুজন নাগরিককে আটকে রাখা যায়, কিন্তু এ দেশে ক্ষমা চাইবার কালচার হবে না। তারা কি বলবে না এই ঘটনার জন্য আমরা দুঃখিত-লজ্জিত, আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিচ্ছি...! যদি প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ না করেন, এটা আমাদের জন্য অনেক বড় লিগ্যাল গ্রাউন্ড। কোনো অভিযোগ ছাড়া সম্পূর্ণ বেআইনি মুচলেকা নিয়ে তাদের ছাড়া হয়েছে। এ রকম মুচলেকা নিয়ে ছাড়ার আইনি কোনো সুযোগ নেই। এটা শুধু ইচ্ছাকৃতই না, পরিকল্পিত। এটা করা হয়েছে শুধুমাত্র এলাকার অন্যদের ভয় দেখানোর জন্য।

সংবাদ সম্মেলনে এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সহ-সভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেনসহ আরো বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

যা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

এদিকে তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন নির্মাণের প্রসঙ্গ এনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, আমাদের সময়ে যেখানে খেলাধুলা করতাম, সেই অবস্থাটা এখন আর নেই। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য আমরা কষ্টবোধ করি। মূল কারণ আমাদের নগরায়ণ, আমাদের জায়গা কম।

তিনি বলেন, কলাবাগান প্রসঙ্গ যখন আসে, আমরা যা-ই কিছু বলি, গুরুত্বের দিক দিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটা বড় দায়িত্ব থাকে। আমরা যদি আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ হই তাহলে সবকিছু মুখ থুবড়ে পড়বে। কলাবাগান থানা ভবন দীর্ঘদিনের একটি প্রচেষ্টা। ভাড়া ভবনে থানা পরিচালনা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক জায়গাটিকে ‘খাসজমি’ হিসেবে চিহ্নিত করে কলাবাগান থানাকে বরাদ্দ দিয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, সব প্রক্রিয়া শেষে পুলিশ যখন ভবন নির্মাণ করতে যায়, তখন খেলার মাঠের দাবিতে আন্দোলনে নামেন স্থানীয়রা। আমাদের মেয়র বলেছেন, এই জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে দিতে। আমরা মনে করি, খেলার মাঠে বাচ্চারা খেলাধুলা করবে-- এটাই স্বাভাবিক এবং খেলার মাঠ যেন থাকে সেজন্য আমরা মনে করি, খেলার মাঠের ব্যবস্থা করতে হবে। মেয়রকে বলেছি, সবাইকে বলেছি একটা বিকল্প খোঁজার জন্য। এটা আমরা পরবর্তী সময়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব কী করা যায়।

এ সময় মাঠটি রক্ষায় আন্দোলনকারী সৈয়দা রত্না ও তার ছেলেকে আটকের বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খান বলেন, যতটুকু জেনেছি, তারা লাইভ ভিডিওতে এসে অনেক কিছু প্রচার করছিল, সেগুলো নাকি একটু অসঙ্গতিপূর্ণ। সেজন্য বারবার নিবৃত্ত করার পরও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন থামাতে পারেনি, তখন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য থানায় নিয়েছিল। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।

অল্প বয়সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলাম

প্রায় ১৩ ঘণ্টা পর রাজধানীর কলাবাগান থানা থেকে ছাড়া পেয়েছেন মাঠরক্ষার আন্দোলনে সক্রিয় সৈয়দা রত্না ও তার ছেলে। থানার হাজতখানা থেকে মুক্ত হয়ে সৈয়দা রত্নার এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছেলে পিয়াংসু বলেছেন, ‘অল্প বয়সে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলাম।’

পান্থপথে স্কয়ার হাসপাতালের উল্টো দিকের গলির পাশে একটি খোলা জায়গা রয়েছে। এটি তেঁতুলতলা মাঠ হিসেবে পরিচিত। স্থানীয় শিশুরা সেখানে খেলাধুলা করে। পাশাপাশি মাঠটিতে ঈদের নামাজ, জানাজাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান হয়। এই মাঠে কলাবাগান থানার স্থায়ী ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর থেকেই এর প্রতিবাদ করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রোববার সকালে ওই মাঠে ইট-সুরকি ফেলা হলে সেখানে গিয়ে ফেসবুকে লাইভ করেন সৈয়দা রত্না। একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে তাকে ধরে নিয়ে যায় পুলিশ। পরে তার ছেলে পিয়াংসুকে বাসা থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এলে তাকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে মা-ছেলেকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।

মুক্তি পেয়ে সৈয়দা রত্নার ছেলে জানায়, ‘আটকের পর থানার গাড়িতে তুলে পুলিশ আমাকে হুমকি দেয়, পুঁটিমাছ বেশি লাফাবি না। বেশি লাফালে সমস্যা হবে।’ তবে থানায় নেওয়ার পর তার সঙ্গে কোনো খারাপ আচরণ করা হয়নি বলে জানান আইডিয়াল কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী এই শিক্ষার্থী। তিনি বলেন, ‘আমি অল্প বয়সেই এমন ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলাম।’

 

মন্তব্য

Beta version