বাংলাদেশে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে পাচারকারী এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পি কে হালদার) ভারতে আটক হওয়ার বিষয়ে এখনো কিছুই জানে না বাংলাদেশ।
ভারত পিকে হালদারের আটকের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে জানালে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
শনিবার (১৪ মে) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে প্রশ্নের জাবাবে তিনি এ তথ্য জানান।
ড. মোমেন বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে এখনো আমাকে এ সম্পর্কে কেউ কিছুই জানায়নি এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও জানায়নি।
বিষয়টি আপনাদের মতো আমিও মিডিয়াতে দেখেছি। আমাদের জানালে যা যা করা দরকার সেটি আমরা করবো। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, তিনি বলবেন।
বাংলাদেশের অনুরোধের প্রেক্ষিতে পিকে হালদারকে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারা (ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্ট- ইডি) তথ্য সংগ্রহ করে গেছেন। এর পরের বিষয়গুলো আমি জানি না।
বিদেশে অর্থ পাচারকারীদের ফিরিয়ে আনতে দুর্নীতি দমন কমিশন বহু আগে থেকেই কাজ করছে উল্লেখ করে মোমেন বলেন, অনেক লোকজন আমাদের টাকা নামে বেনামে বিভিন্ন দেশে পাচার করেছে। এরা দেশের শত্রু, সুতরাং এদের ধরে আনতে পারলে ভালো।
ডিরেক্টরেট অব এনফোর্সমেন্টের (ইডি) বরাত দিয়ে হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (১৪ মে) সকালে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় ভারতের অর্থ-সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বাহিনী এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেট (ইডি)। অভিযানে পি কে হালদারসহ তিন জনকে আটক করা হয়।
প্রতিবেদনে প্রশান্ত কুমার হালদার, প্রিতীশ কুমার হালদার ও প্রাণেশ কুমার হালদারের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে প্রীতিশ হালদার পি কে হালদারের আপন ছোট ভাই। ভারতে তার বিপুল পরিমাণ অর্থের সন্ধান পাওয়া গেছে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় পিকে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধার কাছে এই অর্থের সন্ধান মেলে।
ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রশান্ত কুমার হালদার তার সহযোগীদের মাধ্যমে ভারতে অন্তত ৩০০ কোটি টাকা পাচার করেছে। পুরো টাকাই হুন্ডির মাধ্যমে ভারতে নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগণার অশোকনগরে সম্পত্তি কেনার পাশাপাশি আশেপাশের বিভিন্ন এলাকাসহ কোলকাতার অভিজাত এলাকাতেও বিনিয়োগ করা হয়েছে।
অশোকনগরে পি কে হালদারের অন্যতম প্রধান সহযোগী সুকুমার মৃধার নামে চার বিঘে জমির ওপর একটি প্রাসাদোপম বাড়িরও সন্ধান পাওয়া গেছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে সুকুমার মৃধা ও তার মেয়ে অনিন্দিতা মৃধাকে দুদক আটকের পর থেকে তারা এখনো বাংলাদেশের কারাগারে রয়েছেন।
এর আগে ২০১৮ সালে পি কে হালদার এবং তার ভাই প্রীতিশ কুমার হালদার কানাডার পাশাপাশি ভারতেও হাল ট্রিপ টেকনোলজি নামে একটি প্রতিষ্ঠান খোলেন। সেই প্রতিষ্ঠানের সূত্র ধরেই পিকে হালদার ও তার সহযোগীরা ভারতে অবৈধভাবে অর্থ পাচার করে বিপুল সম্পত্তি গড়ে তুলেছেন বরে দাবি ভারতীয় গোয়ান্দাদের।
মন্তব্য