প্রথমে টার্গেট করা হয় ছাত্রীকে। পরবর্তীতে তার মাকে। গৃহশিক্ষকের সুযোগ নিয়ে এ ধরনের অপরারে জড়ান মামুন নামের এক যুবক। ছাত্রী ও তার মাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অবশেষে ওই গৃহ শিক্ষককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। শনিবার ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
মামুনের বাড়ি ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার উৎরাইলে। ছাত্রীকে পড়ানোর সুযোগে বিভিন্ন অশ্লীল ছবি গোপনে ধারণ করতেন মামুন। একপর্যায়ে ছাত্রী পরীক্ষায় খারাপ করলে ওই গৃহশিক্ষককে বাদ দেওয়া হয়। পরে গোপনে ধারণকৃত ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ছাত্রী ও তার মায়ের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা করে। এসব তথ্য জানান- সিআইডির অতিরিক্ত এসপি আজাদ রহমান।
তিনি বলেন, মেয়েটি দশম শ্রেণির ছাত্রী। অভিযুক্ত শিক্ষক মামুন একই এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা এবং এলাকায় টিউশনি করেন। মেয়েটি যখন ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়তো, সেই সময় গৃহশিক্ষক মামুন পড়ানোর সময় গোপনে মেয়েটির অজান্তে তার বিভিন্ন ছবি মোবাইলফোনে ধারণ করেন। ধারণকৃত ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে কৌশলে সকলের অজান্তে অভিযুক্ত মামুন বিভিন্ন সময় মেয়েটির খোলামেলা আরও ছবি তুলে নিজ মোবাইলে সংরক্ষণ করে রাখেন।
অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় ভয়ে বিষয়টি পরিবারের কাউকে জানায়নি মেয়েটি। অষ্টম শ্রেণির রেজাল্ট খারাপ হওয়ার পর তার পরিবার মামুনকে গৃহশিক্ষক থেকে বাদ দেয়। এরপর থেকে অভিযুক্ত মামুন মেয়েটি স্কুলে যাতায়াতের সময় পূর্বে ধারণকৃত ছবি প্রকাশ করার ভয় দেখিয়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার প্রস্তাব দেন। কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মামুন মেয়েটির পরিবারের ছবি ব্যবহার করে ওই মেয়ের মায়ের নামে একটি ফেইক ফেসবুক আইডি খোলেন।
সেই ফেসবুক আইডি থেকে মামুন ওই মেয়ের মায়ের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে বার্তা পাঠিয়ে কু-প্রস্তাব দেন। মেয়েটির মা মামুনের কু-প্রস্তাবে সাড়া না দিলে তিনি ওই মেয়ের ছবি পাঠিয়ে হুমকি দেন যে, তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে দেবেন। বিভিন্ন সময় মামুন ওই ফেক আইডির ম্যাসেঞ্জার থেকে মেয়ের মাকে বিভিন্ন ধরণের অশ্লীল ও পর্ণ স্থিরচিত্র ও ভিডিও পাঠাতে থাকেন। একের পর এক হুমকি-ধামকিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠে মেয়েটির পরিবার। একপর্যায়ে মামুনের ধারণকৃত ছবি প্রচারের বিষয়ে মেয়ের পরিবার সিআইডির সাইবার পুলিশের কাছে অভিযোগ করে।
সিআইডির সাইবার পুলিশ ঘটনার বিষয়ে অনুসন্ধান করে অভিযোগের সত্যতা পায়। পরে সাইবার পুলিশের একটি টিম তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় অভিযুক্ত মামুনের অবস্থান শনাক্ত করে। ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তার কাছ থেকে অপরাধ কাজে ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি জব্দ করা হয়। অভিযুক্ত গৃহশিক্ষক মামুনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য