-->
৫ লাখ টাকা লুটের অভিযোগ

চাঁদা না দেয়ায় ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুলকে মারধর

নিজস্ব প্রতিবেদক
চাঁদা না দেয়ায় ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজুলকে মারধর

চাঁদা না দেয়ায় বেঙ্গল বিল্ডার্সের ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলামকে মারধর করে তার কাছ থেকে ৫ লক্ষাধিক টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে সাভারের দত্তপাড়া এবং কাকাবট সংযোগ সড়কে। সাভারের চাঁপাইন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি নুরুল আমিন রানা ওরফে ব্যস্ত রানার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে।

 

এ বিষয়ে বেঙ্গল বিল্ডার্সের ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম বাদী হয়ে সাভার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

 

সাভার থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সাভারের দত্তপাড়া এবং কাকাব সংযোগ সড়কে মাটি ভরাট এবং ইটের সলিংয়ের কাজ করছে বেঙ্গল বিল্ডার্স।

 

এ কাজ তদারকি করছিলেন ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম। তবে নুরুল আমিন রানা অভিযোগ অস্বীকার করে ভোরের আকাশকে বলেন, ঘটনাস্থলে এসে খোঁজখবর নিন। আমার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা মিলবে না।

 

তিনি বলেন, এর আগে আমার ইউনিয়নে যে কাজ করেছে, তা ঠিক মতন করেনি। কাজ না করেই টাকা নিয়ে যাবে, তা হবে না। প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের জন্য টাকা দিয়েছেন। কাজ না করে আত্মসাতের জন্য না। আপনি সাভারে আসেন, আপনার আসার খরচ আমি দেব। তারা যে কাজ ঠিকমতো করেনি সেটা উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা জানেন। আপনি সাভারে এসে বিষয়গুলো সরেজমিনে দেখেন বা উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বললে সত্যতা পাবেন। আগে আমার কাজ বুঝে দিতে হবে, তারপর অন্য কথা।

 

অভিযোগের বিষয়ে বেঙ্গল বিল্ডার্সের সাইট ইঞ্জিনিয়ার মো. রিয়াজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা এর আগে চাঁপাইন ইউনিয়নে একটি সড়কের কাজ করেছি। তখন চাঁপাইন ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি রানা মিয়া এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। কিন্তু তাকে আমরা কোনো চাঁদা দিইনি। আজ সকাল সাড়ে দশটার দিকে এখানে এসে তিনি আমার ওপর হামলা চালান। আমি কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই মারধর শুরু করেন। মারার সময় বলছিলেন আমার চাঁদা না দিয়ে কেন এসেছিস।

 

এ সময় আমার কাছে থাকা পাঁচ লাখ দশ হাজার টাকা তিনি নিয়ে যান। আমার ব্যবহৃত মোবাইলটিও নিয়ে যান। আমি তাকে অনেক হাতে-পায়ে ধরলেও তিনি আমাকে রেহাই দেননি। কিল-ঘুসি মারতে থাকেন। আমাকে তার বাইকে করে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাইকে উঠতে বলেন। আমি বাইকে না উঠলে আমাকে জোরাজুরি করেন। প্রায় ১৫-২০ মিনিট জোরাজুরি করে যখন তিনি আমাকে তুলতে পারছিলেন না, তখন আমাদের যারা কাজ করছিল, তাদের থেকে কুড়াল নিয়ে আমাকে কোপ দেয়ার ভয় দেখালে আমি তার সাথে বাইকে উঠি।

 

এরপর আমাকে তার এলাকায় নিয়ে তার ১০-১২ জন গুন্ডা বাহিনীর পাহারায় আটকে রাখেন। কিছুক্ষণ পর সেখানেও আরেকটি মারামারি লাগলে তার গুন্ডা বাহিনীর লোকজন সেদিকে দৌড় দিলে আমিও এই ফাঁকে দৌড়ে পালিয়ে চলে আসি।’

 

প্রকল্প ম্যানেজার খন্দকার মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, সকালে রানা সাহেব আমাকে ফোন দিয়ে বললেন, তুমি কোথায়? আজকে তোমাদের সাইটে আসব। আমি তাকে বললাম, আমি বিরুলিয়া আসছি। একটু পরে আসব।

 

আপনি আসেন। আমি বিরুলিয়ায় আসার আগে সাইটে গিয়ে ইঞ্জিনিয়ারের কাছে ইট কেনার জন্য পাঁচ লাখ দশ হাজার টাকা দিয়ে যাই। বিরুলিয়া থেকে ফিরতে একটু দেরি হচ্ছিল। হঠাৎ সাইট ইঞ্জিনিয়ার আমাকে ফোনে সব ঘটনা জানান। আমি দ্রুত সাইটে চলে আসি।

 

ওই সড়কের পাশে সবজি ক্ষেতে কাজ করছিলেন স্থানীয় জালাল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আমি কাজ করছিলাম। তখন চিল্লাপাল্লার শব্দ শুনে তাকিয়ে দেখি, রানা ওনাকে গালি দিচ্ছেন আর মারধর করছেন। যেসব ভাষায় গালি দিয়েছেন, তা মুখে আনার মতো না।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version