-->

মিথানল ও ইথানল অপব্যবহার রোধে ডিএনসির কর্মশালা

নিজস্ব প্রতিবেদক
মিথানল ও ইথানল অপব্যবহার রোধে ডিএনসির কর্মশালা

মদ তৈরির প্রধান উপাদান ‘ইথানল’। আর এর পরিবর্তে ‘মিথানল’ ব্যবহার করা হলে এটি বিষে পরিণত হয়। মিথানল মিশ্রিত এই বিষাক্ত মদ পান করে প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। ১৯৯৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত অন্তত তিনশ জন প্রাণ হারিয়েছেন। এর মধ্যে বিষাক্ত মদ পান করে গত চার মাসেই মারা গেছেন ১৫ জন। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি) সূত্রে এ তথ্য পাওয়া যায়।

 

ডিএনসির প্রধান রাসায়নিক পরীক্ষক ড. দুলাল কৃষ্ণ সাহা গণমাধ্যমকে বলেন, মিথানল (মিথাইল অ্যালকোহল) এতটাই বিষাক্ত যে, ১০ ফোটা পান করলে অন্ধত্ব বরণ করতে হয়। ২০ ফোটা পানে কিডনি বিকল হয়ে যায়। আর ৩০ ফোটা পান করলে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে। বিষাক্ত মদের ব্যবহার রোধ করা না গেলে মৃত্যুর তালিকা দীর্ঘ হতে থাকবে।

 

জানা যায়, মিথানল ৫০-৬০ টাকা লিটার। আর ইথানলের প্রতি লিটারের মূল্য ৩৫০ টাকা থেকে চারশ’ টাকা। দুটির রং অভিন্ন। যে কারণে দুটির পার্থক্য বোঝা অসম্ভব। মূল্য কম হওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা ইথানলের সঙ্গে মিথানল মিশ্রণ ঘটিয়ে বিষাক্ত মদ বিক্রি করছে, যা পান করে মানুষের অঙ্গহানি কিংবা প্রাণহানি ঘটছে।

 

এদিকে, ইথানল ও মিথানল অপব্যবহার রোধে বুধবার সেগুনবাগিচায় ডিএনসির প্রধান কার্যালয়ে এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিএনসির মহাপরিচালক মো. আবদুল ওয়াহাব ভুঞা।

 

স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিএনসির অতিরিক্ত মহাপরিচালক মো. আজিজুল ইসলাম। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাইফুল ইসলাম, খায়রুল কবীর মেনন ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের রসয়ান বিভাগের চেয়ারম্যান আল নাকিব চৌধুরী।

 

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী বলেন, ইথানাল ও মিথানল অনেক গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক উপাদান। এর অপব্যবহার মানুষের জীবনের জন্য হুমকি স্বরূপ। ইথানল ও মিথানল অপব্যবহার রোধে প্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। ইথানল ও মিথানলের অপব্যবহার রোধে করণীয় নির্ধারণে প্রয়োজনীয় গবেষণা কার্যক্রম একসঙ্গে করার জন্য মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ জানান তিনি।

 

ডিএনসির মহাপরিচালক বলেন, অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া ইথানল ও মিথানলের আমদানির অনুমতি থাকে না এবং বৈধভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো ইথানল ও মিথানলের যৌক্তিক কোটা বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে।

 

দিনব্যাপী কর্মশালায় ডিএনসির কর্মকর্তারা ছাড়াও বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন, বিসিএসআইআর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও সুরক্ষা সেবা বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version