প্রথমে নারীকে দিয়ে ফাঁদ পাতা হতো। ফেসবুকে বন্ধুত্বের পর গড়ে ওঠে প্রেমের সম্পর্ক। একান্তে সময় কাটানোর প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে যাওয়া হতো বাসায়। এরপর মোটা অঙ্কের টাকার জন্য সেখানেই আটক রেখে চালানো হতো নির্যাতন। মুক্তিপণের টাকা না পেলে বাড়তো নির্যাতনের মাত্রা। সম্প্রতি প্রলোভন দেখিয়ে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে অপহরণের পর অভিযোগ জানায় স্বজনরা। পরে অভিযান চালিয়ে নারীসহ এই প্রতারক চক্রের ৬ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। উদ্ধার করা হয় ভুক্তভোগীকে।
জানা গেছে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিলকিস নামের এক তরুণীর সঙ্গে পরিচয় হয় উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের। বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষক তার ভাইয়ের সাথে দেখা করতে যান বনশ্রী এলাকায়। তার সাথে দেখা না হলে এক পর্যায়ে ফোন দেন বিলকিসকে। তারপরই নানা প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিক্ষককে খিলগাঁওয়ের একটি বাসায় নিয়ে যায় বিলকিস। সেখানেই আটকে রেখে তার ওপর নির্যাতন চালায় গ্রেপ্তারকৃতরা। আটকে রাখার বিভিন্ন পর্যায়ে পরিবারের কাছ থেকে ৪৮ হাজার টাকা মুক্তিপণ আদায় করে বিলকিসচক্র। পরে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে তারা।
ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজন বিষয়টি পুলিশের এন্টি টেরিজম ইউনিটকে জানালে পরে খিলগাঁও থানা পুলিশের সহায়তায় অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ওই শিক্ষককে। এ সময় চক্রের মূলহোতাসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের থেকে স্টিলের পাইপ, হাতুড়ি, পাঁচটি মোবাইল ফোন ও নগদ প্রায় ৫০ হাজার টাকাসহ বেশ কিছু আলামত জব্দ করে পুলিশ।
শনিবার রাজধানীর খিলগাঁও থানায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এন্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ সুপার ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, অপহরণ চক্রের মূলহোতে বিলকিস নামের এক নারী। আর তার সহযোগী হিসেবে আছে পাঁচ যুবক। চক্রের সদস্যরা গেল বৃহস্পতিবার এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে ডেকে এনে ৩৬ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন চালায়। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খিলগাঁও থানার সহায়তার প্রায় চার ঘণ্টার চেষ্টায় চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিট।
তিনি বলেন. এঘটনায় ৬ জনের বিরুদ্ধে খিলগাঁও থানায় একটি মামলা হয়েছে। বিলকিস নামের ওই নারী আগেও একইভাবে নানাজনকে ফাঁদে ফেলে আদায় করেছে টাকা। তার বিরুদ্ধে গুলশানসহ বিভিন্ন থানায় মামলাও রয়েছে।
মন্তব্য