আলিশান বাড়ি, কৃষি জমি, পুকুর, শপিংমলে দোকান- কী নেই তার। চলাফেরা করেন জমিদার স্টাইলে। তার উঠাবসা প্রভাবশালীদের সঙ্গে। ফলে তাকে নিয়ে কেউ মুখ খোলার সাহস করেন না। কিন্তু তার এই অগাধ সম্পদের আয়ের উৎস্য নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকাবাসী। অবৈধ উপায়ে তিনি এই অগাধ সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদকে) অভিযোগ করা হয়েছে। বলছিলাম ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের অফিস সহকারী মো. মিজানুর রহমান মিজানের কথা।
দুদকে দেওয়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত মিজান ফরিদপুর সদর উপজেলার অম্বিকাপুর ইউনিয়ন দয়ারামপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী। তিনি যে টাকা বেতন পান; তা দিয়ে সংসার চালানো দায়। তাহলে এতো সম্পদ তিনি করলেন কী করে? সাধারণ পরিবারে জন্ম নিয়েছেন এই মিজান। ফরিদপুর শহরের মোল্লা বাড়ি সড়কে তার রয়েছে তিনতলা বাড়ি। শহরতলী দয়রামপুর গ্রামে দুই একরজুড়ে পুকুরসহ বাগান এবং পাশেই রয়েছে কৃষি জমি। শহরের প্রাণকেন্দ্র জনতা ব্যাংকের মোড়ে তলায় ২টি দোকান এবং আয়শা সুপার মার্কেটে ২টি দোকান রয়েছে। এছাড়া নামে-বেনামে আরও অনেক সম্পদ রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়। সব মিলিয়ে তিনি কয়েক কোটি টাকার মালিক। অভিযোগ আছে, সদর উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন দপ্তরের কাজ হয় এই মিজানের মাধ্যমে। সকল বরাদ্দ থেকে শুরু করে হাট-বাজারের ইজারা, বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, চেক পাস তাকে ছাড়া হয় না। মূলত তিনি দুর্নীতির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের টাকা কামিয়ে থাকেন। অনেক আগেই তাকে সদর উপজেলা পরিষদ থেকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বদলি করা হয়। তবে তিনি এখনো উপজেলা পরিষদে বহাল রয়েছেন।
অভিযোগকারী মনিরুল ইসলাম বলেছেন, তিনি দেশের একজন নাগরিক হিসেবে মিজানের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন। কেননা, তৃতীয় শ্রেণির একজন কর্মচারীর এতো সম্পদ কোথা থেকে এলো, তা জানা দরকার। তিনি অবৈধ উপায়েই এই টাকা অর্জন করেছেন। তার শাস্তি না হলে অন্যরা দুর্নীতিতে উৎসাহিত হবেন। দুদক মিজানের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি আশা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে কয়েকবার মিজানকে ফোন করা হয়। তবে তিনি ফোনকল গ্রহণ করেননি। তার আরেকটি নাম্বারে গতকাল মঙ্গলবার কল করা হলে রিসিভ করেন একজন নারী। তিনি মিজানের স্ত্রী পরিচয় দেন। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তিনি বলেন, তার আরেকটি নাম্বার আছে; সেটাতে কল দিন। এই ফোনটি তিনি বাসায় রেখে গেছেন। পরে তাকে আরও কয়েকবার কল করা হয়। তবে তিনি রিসিভ করেননি।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য