-->

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গঠনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ শুরু

বাণিজ্য ডেস্ক
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গঠনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ শুরু
বাংলাদেশ ব্যাংক

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম গঠনে পরীক্ষামূলকভাবে ‘থিংকবিগ সল্যুশন লিমিটেড’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালা করে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহকারী ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠান ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে তাৎক্ষণিক অর্থায়নের সুবিধা পাবে। একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে রেজিস্ট্রেশন করে ডিসকাউন্টিং পদ্ধতিতে বিল বেচা-কেনা হবে।

জানা গেছে, ক্ষুদ্র সরবরাহকারী করপোরেট প্রতিষ্ঠানকে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করে সাধারণত দেরিতে বিল পায়। এতে তার পুঁজি নির্দিষ্ট একটি সময়ের জন্য আটকে থাকলেও অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে অর্থায়নের সুবিধা পায় না। এতে টাকার অভাবে পরবর্তী কাজ অনেক সময় বন্ধ থাকে। এ রকম প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম করা হচ্ছে।

বর্তমানে আইপিডিসি ফিন্যান্সের গ্রাহকদের জন্য এ ধরনের একটি প্ল্যাটফর্ম থাকলেও সেখানে শুধু তারাই অর্থায়ন করে। তবে নতুন এ প্ল্যাটফর্মে একাধিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান যুক্ত হওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারে বলা হয়েছে, দারিদ্র্য দূরীকরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প গুরুত্বপূর্ণ খাত। জাতীয়ভাবে এ খাতে বিভিন্ন ঋণ সহায়তা চলমান রয়েছে। তবে নানা প্রতিবন্ধকতার কারণে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আর্থিক সহায়তা নেওয়ার প্রক্রিয়া সহজ নয়। এমনকি ঋণ প্রাপ্তির পর পণ্য তৈরি করে ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে সরবরাহের মাধ্যমে প্রাপ্ত ‘ট্রেড রিসিভেবল’-এর বিপরীতে তাৎক্ষণিক অর্থ পাওয়া সহজ ও স্বয়ংক্রিয় না হওয়া এবং বাজারভিত্তিক মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসরণ না করায় চলতি মূলধন নিয়েও এমএসএমই প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। তাদের সমস্যার বিষয়টি সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় নিয়ে অভ্যন্তরীণ ট্রেড রিসিভেবলের বিপরীতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অর্থায়ন বা সাপ্লাই চেইন ফিনান্সিংয়ের জন্য পরীক্ষামূলক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম বিষয়ে নীতিমালা করা হলো।

নতুন ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এমএসএমই প্রতিষ্ঠান ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ট্রেড রিসিভেবল্স আপলোড করতে পারবে। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান যা কিনতে পারবে। এতে করে ট্রেড রিসিভেবলের বিপরীতে দ্রুত ও সহজে অর্থ পাবেন ক্ষুদ্র সরবরাহকারী। যাতে তাদের ব্যবসা পরিচালনা সহজ হবে। আবার বিনিয়োগকারী ট্রেড রিসিভেবলের মেয়াদ পূর্তিতে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান থেকে পূর্ণ মূল্য পেয়ে লাভবান হবে।

ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান, করপোরেট প্রতিষ্ঠান এবং ক্ষুদ্র সরবরাহকারীর মধ্যে বিল ডিসকাউন্টিং পদ্ধতিতে কেনা-বেচা হবে। প্রক্রিয়াটি হবে এমন- বড় করপোরেটকে পণ্য সরবরাহের বিপরীতে ক্ষুদ্র সরবরাহকারী হয়তো ৬০ দিন পরে বিল পাবে। এর বিপরীতে ট্রেড রিসিভেবল বা বিল দেয় করপোরেট প্রতিষ্ঠান। এখন এই ৬০ দিনের জন্য হয়তো ক্ষুদ্র সরবরাহকারী অর্থায়ন চেয়ে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে তুলল।

আগ্রহী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ডিসকাউন্টিং পদ্ধতিতে ১০০ টাকার বিল হয়তো ৯৮ টাকায় কেনার অফার করল। এভাবে শেয়ার বাজারের মতো একাধিক অফারের ভিত্তিতে ওই বিল কিনে ক্ষুদ্র সরবরাহকারীকে টাকা দেবে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান। এরপর বড় করপোরেট যখন ক্ষুদ্র সরবরাহকারীকে টাকা পরিশোধ করবে তখন ব্যাংক পুরো বিল মূল্য পেয়ে যাবে।

নীতিমালার আলোকে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত একটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান একই সময়ে সব মিলিয়ে এখানে সর্বোচ্চ ২০ কোটি টাকা খাটাতে পারবে। আর একই করপোরেট গ্রাহককে পণ্য সরবরাহকারী বিভিন্ন ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানকে একই সময়ে দিতে পারবে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা। এছাড়া এই প্ল্যাটফর্মে একটি বিলের বিপরীতে সর্বোচ্চ ২৫ লাখ টাকা অর্থায়ন করা যাবে। একজন ক্ষুদ্র সরবরাহকারীকে এই প্ল্যাটফর্ম থেকে একই সময়ে দেওয়া যাবে সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা।

মন্তব্য

Beta version