-->

লক্ষ্য ছুঁয়েছে কৃষিঋণ বিতরণ

কৃষক ফেরতও দিয়েছেন বেশি

নিজস্ব প্রতিবেদক
লক্ষ্য ছুঁয়েছে কৃষিঋণ বিতরণ
গোপালগঞ্জ সদরের একটি ধানক্ষেত। সম্প্রতি তোলা ছবি।

চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে কৃষিঋণ বিতরণ হয়েছে ১৩ হাজার ৫৯৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা। এ ঋণ চলতি অর্থবছরের জন্য নির্ধারিত ঋণের ৫১ শতাংশ, যা কৌশলগত লক্ষ্যের সমান। গত বছর একই সময়ে বিতরণ হয়েছিল লক্ষ্যমাত্রার ৪৬ শতাংশ। একই সময়ে কৃষক ফেরতও দিয়েছেন বেশি।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেদের বিতরণ করা মোট ঋণের ২ শতাংশ কৃষিঋণ হিসেবে বিতরণ করছে। এর বাইরে বিশেষায়িত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ও রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ঋণের পুরোটাই কৃষিঋণ হিসেবে বিতরণ করছে।

চলতি বছর ৫৬ বাণিজ্যিক ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ৮ বাণিজ্যিক-বিশেষায়িত ব্যাংক বিতরণ করছে ১১ হাজার ৪৫ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৩৯ শতাংশ। অন্যদিকে ৮ বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকসহ ৪৫ বেসরকারি ব্যাংক বিতরণ করবে ১৭ হাজার ৩৪৬ কোটি টাকা, যা লক্ষ্যের প্রায় ৬১ শতাংশ।

সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের কৃষিঋণ বিতরণে বাধ্যবাধকতা আছে। যেসব ব্যাংকের পল্লি অঞ্চলে নিজস্ব শাখা আছে, তারা নিজেরা বিতরণ করবে। যেসব ব্যাংকের পল্লি অঞ্চলে নিজস্ব শাখা নেই, তারা ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থার মাধ্যমে বিতরণ করবে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজস্ব শাখার মাধ্যমে বিতরণ করছে এবং সুদহার নিচ্ছে ৯ শতাংশ।

অন্যদিকে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের নিজস্ব শাখা না থাকার কারণে এনজিওর মাধ্যমে বিতরণ করছে। এক্ষেত্রে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এনজিওর কাছে থেকে সুদ নিচ্ছে ৯ শতাংশ। এনজিওগুলো কৃষকের কাছ থেকে সুদ নিচ্ছে ২১ থেকে ২২ শতাংশ পর্যন্ত।

ফলে মোট ঋণের অর্ধেকের বেশি যাচ্ছে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এবং এ ঋণের ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ যাচ্ছে কৃষকের কাছে এবং সুদ গুনতে হচ্ছে ২১ থেকে ২২ শতাংশ হারে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, নির্ধারিত ঋণ বিতরণ করতেই হবে। যদি বিতরণ না করে, তাহলে বছর শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কারেন্ট ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ টাকা কেটে রাখা হয় এবং পরের বছর অনার্জিত ঋণ বিতরণ করলে তাকে আগের বছর কেটে রাখা টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যে দেখা যায়, জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে চার বাণিজ্যিক ব্যাংক কোনো কৃষিঋণ বিতরণ শুরুই করেনি। ব্যাংকগুলো হলো- বিদেশি কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ও উরি ব্যাংক এবং দেশি নতুন বেঙ্গল কমার্শিয়াল ব্যাংক ও মধুমতি ব্যাংক। শেষের ব্যাংকটি ৯০ লাখ টাকা ব্যাংক বিতরণ শুরু করেছে।

কৃষিঋণ বিতরণ শুরু না করা বিদেশি কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলনের কান্ট্রি ম্যানেজারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা যায়নি।

তবে অন্য এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ফোনে ভোরের আকাশকে বলেন, ‘কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন ব্যাংক হিসেবে ছোট্ট। নিজস্ব চ্যানেলে কৃষিঋণ বিতরণ কঠিন। আমরা এমএফআইর মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ করে থাকি। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের ছয় মাসে বিতরণ শুরু না করলেও বাকি সময়ে আমরা বিতরণ করব।

‘বিগত বছরগুলোয়ও আমরা এভাবে বিতরণ করে থাকি। কৃষিঋণ বিতরণের পাশাপাশি আদায় হারও বেশি। জুলাই-ডিসেম্বর ছয় মাসে আদায় হয়েছে ১৩ হাজার ৫৯৩ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ হওয়া ঋণের ২৮.৫২ শতাংশ। কৃষি খাতের বিতরণ হওয়া ঋণের পরিমাণ ৪৭ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা।’

মন্তব্য

Beta version