-->
শিরোনাম

চালের উৎপাদন বাড়াতে রোডম্যাপ হচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
চালের উৎপাদন বাড়াতে রোডম্যাপ হচ্ছে: কৃষিমন্ত্রী
কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। ফাইল ছবি

চাহিদা অনুযায়ী চালের উৎপাদন বাড়াতে রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।

বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সকালে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ধানের উৎপাদন বাড়াতে অতি উচ্চফলনশীল ইনব্রিড ও সুপার হাইব্রিড জাতের আবাদ বাড়ানো সংক্রান্ত সভা শেষে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘আমনের মৌসুমে চালের দাম বাড়ছে। এ বছর আউশ, বোরো ও আমনে রেকর্ড উৎপাদন হয়েছে। সরকারি মজুদও সর্বোচ্চ, তারপরও চালের দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না।

‘এ অবস্থায় চালের মূল্য নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হলে উৎপাদন বাড়াতে হবে। এটি করতে উচ্চফলনশীল ইনব্রিড ও সুপার হাইব্রিড জাতের আবাদ বাড়াতে হবে। সে লক্ষ্যে রোডম্যাপ প্রণয়ন করা হচ্ছে, যাতে করে এক-দুই বছরের মধ্যে উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি করা যায়।’

দেশে কৃষি জমি ক্রমশ কমছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নতুন উদ্ভাবিত উচ্চ উৎপাদনশীল ধানের জাতগুলোকে দ্রুত মাঠে নিয়ে যেতে হবে। সুপার হাইব্রিডের চাষ বাড়াতে হবে। পাহাড়, হাওর, উপকূলসহ প্রতিকূল এলাকাতেও ধানের চাষ সম্প্রসারণ করতে হবে। আগামী বোরো, আউশ, আমন মৌসুমে ধানের উৎপাদন বাড়াতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।’

কৃষিমন্ত্রী বলেন, নতুন উদ্ভাবিত অতি উচ্চ ফলনশীল ব্রি ৮৯ ও ব্রি ৯২ বোরো জাতের ধানের উৎপাদন প্রতি শতাংশে প্রায় ১ মণ। এটিকে দ্রুত মাঠে নিতে ব্রি ধান ৮৯ ও ৯২ যেসব কৃষকেরা চাষ করবেন, তাদের তালিকা করে উৎপাদিত ধানের সবটুকু বাজারমূল্যের চেয়ে বেশি দামে বীজ হিসেবে কিনে নেওয়া হবে, যাতে বীজ সংকট না হয়। চাষিদের কাছে জনপ্রিয় করতে বিনামূল্যে বীজ দেওয়া হবে, সারের দাম আরো কমিয়ে দেওয়া হবে।

চালের চাহিদার সঠিক পরিসংখ্যানের ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য দেশে চালের চাহিদা, উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা নিয়ে পরিসংখ্যানগত অসঙ্গতি দূর করতে হবে।  এসময় বিবিএস ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে এ বিষয়ে আরো নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যানের আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী।

চালের দাম বাড়ার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি দেশে চালের দাম কিছুটা অস্থিতিশীল ও ঊর্ধ্বমুখী। আন্তর্জাতিক বাজারেও খাদ্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে। যে গমের দাম টনপ্রতি ২৩০-২৮০ ডলারের মধ্যে ছিল, তা বেড়ে এখন ৪৫০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

‘২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে গম আমদানি হয়েছিল ৪৮ লাখ টন। আর এ অর্থবছরের জানুয়ারি পর্যন্ত আমদানি হয়েছে মাত্র ১৬ লাখ টন। দাম বাড়ার কারণে গম আমদানি কম হচ্ছে। ফলে আটা, ময়দার দাম চালের চেয়ে বেশি। অথচ সবসময়ই আটার দাম চালের চেয়ে কম থাকে।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘এছাড়া দেশে ১০ লাখ রোহিঙ্গা রয়েছে। প্রতিবছর ২২-২৪ লাখ নতুন মুখ যোগ হচ্ছে। প্রাণী-মৎস্যের খাদ্য হিসেবেও চালের কিছু ব্যবহার হচ্ছে। মানুষের আয় এবং জীবনযাত্রার মানও বেড়েছে। এসব মিলে চালের চাহিদা ও কনজামশন দিন দিন বাড়ছে। ফলে, দাম কিছুটা বেশি। তবে এই মুহুর্তে দেশে খাদ্যের কোনো সংকট নেই।’

সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম, মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংস্থাপ্রধান ও বেসরকারি সীড অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য

Beta version