-->
শিরোনাম
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন

দেশে দেশে খাদ্য ও রাজনৈতিক সঙ্কটের শঙ্কা

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
দেশে দেশে খাদ্য ও রাজনৈতিক সঙ্কটের শঙ্কা
দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় লণ্ডভণ্ড ইউক্রেনের প্রতিরোধ বুহ্য। ছবি- দ্য গার্ডিয়ান

আরব বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের অর্থনীতি রাশিয়া ও ইউক্রেনের গম আমদানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। রাশিয়া ও ইউক্রেনের গম না হলে মিসর অচল। দেশটি তার চাহিদার ৮৫ ভাগ গম আমদানি করে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে। তিউনিসিয়ার চাহিদার ৫০ থেকে ৬০ ভাগ গম আমদানি করা হয় ইউক্রেন থেকে।

চাহিদার অর্ধেক গম রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে আমদানি করে তুরস্ক, বাকি গম নিজেরাই উৎপাদন করে। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশও আমদানি করা গমের ওপর নির্ভরশীল।

আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুদ্ধের ভয়াবহতা আর পশ্চিমা বিশ্বের অবরোধের কারণে এরই মধ্যে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে আগে থেকেই খাদ্য উৎপাদন, বিপণন ও সরবারহে সমস্যা সৃষ্টি হয়ে আছে। করোনার প্রভাব কমে আসায় বেশি বেশি খাদ্য উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি হলেও খাদ্যমূল্যে উল্লম্ফনও তৈরি হয়েছে। এরই মধ্যে ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে ‘আগুনে ঘি ঢেলে’ দেওয়ার মতো অবস্থা তৈরি হয়েছে।

আশঙ্কা করা হচ্ছে, এ যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে মিসর, তুরস্কসহ গম আমদানিনির্ভর দেশগুলোতে খাদ্য সঙ্কট থেকে সৃষ্ট পরিস্থিতি রাজনৈতিক সঙ্কট তৈরি করতে পারে। তুরস্কের আগামী নির্বাচনে এর বড় ধরনের প্রভাব পড়তে পারে।

খাদ্য ঘাটতিকে কেন্দ্র সৃষ্ট সমস্যা তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোগানের রাজনৈতিক কেরিয়ারে আঘাত হানতে পারে। দেশটিতে মূল্যস্ফীতির কারণে রুটির দাম বেড়ে গেছে। খাদ্য সংগ্রহের জন্য এখনই কম দামের খাদ্যের জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়াচ্ছে আয়হীন ও কম আয়ের মানুষ।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবরোধের কারণে গম উৎপাদন, সরবারহে সমস্যা তৈরি হবে। এ জন্য তুরস্কের মতো দেশগুলোর বিরোধী দলগুলো, এমনকি আমেরিকাও সে সুযোগ নিতে পারে, যা এরদোগান সরকারের ওপর চাপ বাড়াবে।

রাশিয়া-ইউক্রেনের গম সরবারহ বিঘ্নিত হলে যে সমস্যা হয় তার অভিজ্ঞতা আছে তিউনিসিয়ার।

খাদ্যের এ সংকট আমদানিনির্ভর সব দেশে ছড়াবে বলে মনে করছেন নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি আবুধাবির মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির অধ্যাপক মনিকা মার্কস। এ প্রসঙ্গে খাদ্য সমস্যায় থাকা সুদান, লিবিয়া ও ইয়েমেনের উদহারণ তিনি দিয়েছেন।

আলজাজিরার প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, গত কয়েক বছর ধরেই রাশিয়ার দোকানগুলোতে রুটির লম্বা লাইন লেগে থাকতে দেখা গেছে। করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন আরেক বৈশ্বিক খাদ্য সঙ্কট তৈরি করেছে।

এতে শস্য ভাণ্ডারখ্যাত রাশিয়া-ইউক্রেন থেকে গম ও ভোজ্য তেল সরবারহে বিঘ্ন ঘটবে। ফলে দেখা দেবে খাদ্য সঙ্কট। আর খাদ্য সঙ্কট থেকে দেশে দেশে তৈরি হতে পারে রাজনৈতিক সঙ্কট।

মন্তব্য

Beta version