-->
শিরোনাম
ঢাকা-রিয়াদ একটি করে চুক্তি ও সমঝোতা সই

জ্বালানি তেল নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই: সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী

কূটনৈতিক প্রতিবেদক
জ্বালানি তেল নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই: সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী
বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক সংলাপ হয়েছে বুধবার। ছবি- ভোরের আকাশ

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির মধ্যেও জ্বালানি তেলের সরবরাহ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই জানিয়ে বাংলাদেশ সফররত সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ বলেছেন, তেল সরবারহের বিষয়ে আমরা স্থিতিশীল বাজারের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বুধবার (১৬ মার্চ) সোনারগাঁও হোটেলে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান তিনি। এর আগে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের মধ্যে প্রথমবারের মতো রাজনৈতিক সংলাপ হয়। অনুষ্ঠানে নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে সৌদি আরব গর্বিত। সম্পর্কের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা বেশ আশাবাদী। রাজনৈতিক সংলাপে চমৎকার আলোচনা হয়েছে। সেখানে অনেক বিষয়ে আমাদের আলোচনা হয়েছে।

বাংলাদেশ ও সৌদি আরব অঞ্চলিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি বৈশ্বিক ক্ষেত্রেও একসঙ্গে কাজ করতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সৌদি আরবে কর্মরত বাংলাদেশের ২৫ লাখ কর্মী আমাদের উন্নয়নের পথযাত্রায় অবদান রাখছেন। সৌদি আরবের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে বাংলাদেশে কয়েকশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। আমরা শক্তিশালী ভিত্তির ওপর আরো ব্যাপকতর অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠার বিষয়ে অঙ্গীকারবদ্ধ।

সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা অত্যন্ত আশাবাদী। বাংলাদেশে অবস্থিত সৌদি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যেও আমরা বাংলাদেশ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ লক্ষ করছি। আমাদের আরো অনেক কিছু করার আছে। আমাদের অংশীদারদের নিয়ে আমরা সেই সম্ভাবনাকে আরো বিস্তৃত করার জন্য কাজ করতে চাই।

বৈঠকে বাংলাদেশের ফরেন সার্ভিস একাডেমি ও বাদশা ফয়সাল ইনস্টিটিউটের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক ও উভয় দেশের মধ্যে কাস্টমস সহযোগিতা বিষয়ে চুক্তি সই হয়। সমঝোতা ও চুক্তিতে সই করেন উভয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠকে ইউক্রেন ও রাশিয়ার চলমান পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সংলাপের আগে বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সফরে কেরানীগঞ্জে ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভার্চুয়ালি ভাষা ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি আরো জানান, রাজনৈতিক এই সংলাপে সৌদি আরবে বাংলাদেশের শ্রমবাজার, রোহিঙ্গা সংকট এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়েও আলোচনা হয়। এ সংলাপের মধ্য দিয়ে সৌদি আরব থেকে একটি বড় বিনিয়োগ পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হতে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক সংলাপে যোগ দিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের আমন্ত্রণে দুই দিনের সফরে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) ঢাকা এসেছেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ। দীর্ঘ ছয় বছর পর সৌদি আরবের কোনো পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এলেন। এর আগে ২০১৬ সালের মার্চে তৎকালীন সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আদেল বিন আহমেদ আল যুবায়ের ঢাকা সফর করেন।

সংলাপ শেষে বুধবার (১৬ মার্চ) দুপুরে ঢাকা ত্যাগ করেন সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ।

এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে সৌদি শিল্প মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ কর্তৃপক্ষের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে দেশটির উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের বিষয়টি গুরুত্ব পায়।

মন্তব্য

Beta version